সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেরিয়ারে ইঁদুরদৌড়ে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়ে বাড়ছে ব্যস্ততা। প্রিয়জনের সঙ্গে তৈরি হচ্ছে দূরত্ব। আর তার ফলে ক্রমশ একা হয়ে যাচ্ছে মানুষ। এই পরিস্থিতিতে তাই মানসিক চাপে অনেক সময় সামান্য ব্যর্থতাও হয়ে দাঁড়াচ্ছে আত্মহত্যার (Suicide) বড়সড় কারণ। তার ফলে ২০১৯ সালে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে ৩.৪ শতাংশ। রোজ গড়ে আত্মঘাতী হন ৩৮১ জন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (NCRB) সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ সালে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৮৮৭টি। তার ঠিক পরের বছর আত্মঘাতীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫১৬ জন। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যানেও বৃদ্ধির হার বজায় রয়েছে। NCRB'র রিপোর্ট অনুযায়ী আত্মঘাতী হয়েছেন ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ১২৩ জন। তার ফলে গত বছরের তুলনায় ৩.৪ শতাংশ হারে বেড়েছে আত্মহত্যা। তাঁদের মধ্যে ৫৩.৬ শতাংশ মানুষ গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যুর পথকে বেছে নিয়েছেন। ২৫.৮ শতাংশ মানুষ বিষপান করে আত্মঘাতী হয়েছেন। জলে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু ৫.২ শতাংশ মানুষের। ৩.৮ শতাংশ মানুষের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। দাম্পত্য অশান্তি ছাড়াও কেবলমাত্র পারিবারিক সমস্যায় আত্মহত্যা করেছেন ৩২.৪ শতাংশ মানুষ। অসুস্থতার ফলে মানসিক অবসাদ থেকেও ২০১৯ সালে কমপক্ষে ১৭.১ শতাংশ মানুষ আত্মঘাতী হয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘আবার অন্য মামলায় ফাঁসাতে পারে’, জেল থেকে মুক্তি পেয়েই নতুন আশঙ্কা কাফিল খানের]
লিঙ্গভেদের নিরিখে বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, প্রতি একশো জনের মধ্যে ৭০.২ শতাংশ পুরুষ আত্মহত্যা করেন। তাঁদের মধ্যে ৬৮.৪ শতাংশ বিবাহিত। মাত্র ২৯.৮ শতাংশ মহিলা আত্মহননের পথে বেছে নেন। তাঁদের মধ্যে ৬২.৫ শতাংশ মহিলাই বিবাহিত। এছাড়াও NCRB'র রিপোর্ট বলছে, আত্মঘাতীদের মধ্যে একেবারে পড়াশোনা জানেন না অর্থাৎ নিরক্ষর ১২.৬ শতাংশ মানুষ। প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত পড়েছেন ১৬.৩ শতাংশ মানুষ। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন ১৯.৬ শতাংশ মানুষ। মাধ্যমিক দিয়েছেন ২৩.৩ শতাংশ এবং স্নাতক বা তার ঊর্ধ্বে আত্মঘাতীর পরিমাণ মাত্র ৩.৭ শতাংশ। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর সমীক্ষায় উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী শহরের মানুষের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
২০১৯ সালে মোট ১৮ হাজার ৯১৬ জন আত্মঘাতী হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। তাই আত্মহত্যায় মৃত্যুর নিরিখে প্রথম মহারাষ্ট্র। তামিলনাড়ু রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। সেখানে আত্মহননকারীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৪৯৩ জন। ১২ হাজার ৬৬৫ জনের মৃত্যু হওয়ায় ঠিক তার পরের স্থানই দখল করেছে পশ্চিমবঙ্গ। উত্তরপ্রদেশে জনসংখ্যা বেশি হলেও আত্মহত্যার হার অন্য রাজ্যের থেকে তুলনামূলক কম। মাত্র ৩.৯ শতাংশ। NCRB'র সমীক্ষা অনুযায়ী ঘণ্টায় মোট ৪৮ জনের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়।