শুভায়ন চক্রবর্তী, কেপ টাউন: স্বস্তি এবং অস্বস্তি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (Women’s T20 World Cup) অভিযান শুরুর ঠিক আগে দু’টোই এখন সঙ্গী ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের। পাকিস্তানের (India vs Pakistan) বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ ‘সাফারি’ শুরু করতে চলেছে ভারতের মেয়েরা। মহারণে নামার আগে অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরের ফিট হয়ে ওঠাটা যদি ভারতীয় শিবিরে স্বস্তি হয়, তাহলে অস্বস্তিদায়ক খবরটা হল, আঙুলের চোটের ধাক্কায় দলের সহ অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানার (Smriti Mandhana) অনিশ্চিত হয়ে পড়া।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় ওপেনারকে বিশ্রাম দেওয়া হচ্ছে, সেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন দলের ব্যাটিং কোচ হৃষীকেশ কানিতকর। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “হরমন পাকিস্তান ম্যাচের জন্য ফিট হয়ে গিয়েছে। স্মৃতির আঙুলে চোট রয়েছে। এখনও সম্পূর্ণ চোটমুক্ত নয়। সেরে উঠতে সময় লাগবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্মৃতির খেলার সম্ভাবনা কম। তবে আশা করছি, পরের ম্যাচে ও দলে ফিরবে।” ফলে কোনও অঘটন না ঘটলে নিউল্যান্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মান্ধানাকে বাইরে রেখেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামতে চলেছে হরমনপ্রীতের (Harmanpreet Kaur) ‘টিম ইন্ডিয়া’।
মান্ধানার না থাকা ধাক্কা হলেও তাঁর অভাবে দলের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে, এমনটা মানতে নারাজ কানিতকর। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের মেয়েদের অতীত সাফল্য যথেষ্ট উজ্জ্বল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছয়বারের মধ্যে চারবার জয়ী উইমেন্স ইন ব্লু। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের নিরিখেও পাকিস্তানের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে ভারতীয় দল। অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের আত্মবিশ্বাসও এবার কাপ অভিযানে সঙ্গী শেফালি ভার্মাদের।
[আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ‘পাঠান’ অবতারে কোহলি, জার্সি গায়েই নাচ ‘ঝুমে জো পাঠান’ গানে]
দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে বিশ্বকাপ শুরুর তিন সপ্তাহ আগেই পা রেখেছে হরমনপ্রীতরা। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারলেও দলের পারফরম্যান্স স্বস্তিতে রাখবে ক্যাপ্টেন কৌরকে। আরও বড় স্বস্তি কাঁধের চোট সারিয়ে হরমনপ্রীতের সুস্থ হয়ে ওঠা। পাক-দ্বৈরথে নামার আগেরদিন নেটে ৩০-৪০ মিনিট স্বচ্ছন্দে ব্যাট করলেন তিনি। স্মৃতি না খেললে শেফালির সঙ্গে ওপেনিংয়ে দেখা যাবে স্বস্তিকা ভাটিয়াকে।
তবে বিশ্বকাপ জয়ে এবার স্পিনাররা বড় ভূমিকা নেবেন বলে মনে করছেন কানিতকর। তিনি বলেন, “স্পিনারদের ভূমিকা এবার ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। পিচ দেখে মনে হয়েছে স্পিন সহায়ক হবে। অনেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হয়েছে এখানে। ফলে স্পিনাররা ২২ গজে সাহায্য পাবে।” আর সেক্ষেত্রে দীপ্তি শর্মা যে হরমনপ্রীতের অন্যতম বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন, তা বলাই বাহুল্য। শুধু দীপ্তি নন, পাক-দ্বৈরথে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে রাধা যাদব, রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়ের মতো স্পিনারের ভূমিকাও। পেস অ্যাটাকে ফর্মে থাকা রেণুকা সিং ও শিখা পাণ্ডের ওপরেই ভরসা রাখতে চলেছে হরমনপ্রীতের টিম ইন্ডিয়া।
অন্যদিকে, ভারতের বিরুদ্ধে ‘মিরাকল’ ঘটাতে বিসমা মারুফ, জাভেরিয়া খান, নিদা দারের দিকে তাকিয়ে পাকিস্তান। হরমনপ্রীতদের বিরুদ্ধে জয় পেতে স্পিন অস্ত্রেই শান দিচ্ছেন পাক অধিনায়ক বিসমা। তিনি বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে জিততে গেলে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। স্পিন বিভাগ আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। আশা করব, ভারতের বিরুদ্ধে তারা দুর্দান্ত খেলবে।” প্রতিপক্ষ শিবিরের বার্তাতেই পরিষ্কার, রবিবার মহারণে ফেভারিট হিসেবেই শুরু করবেন হরমনপ্রীতরা।