সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বালোচিস্তানের (Balochistan) প্রতি পাকিস্তানের (Pakistan) অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা করিমা বালোচের (Karima Baloch) রহস্যময় মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় কানাডা। সেখানকার পাক বিরোধী গোষ্ঠীগুলি করিমার মৃত্যুকে ‘খুন’ বলে দাবি করে দ্রুত ও বিস্তৃত তদন্ত চেয়েছে। তাদের ইঙ্গিত, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হওয়াতেই সম্ভবত খুন করা হয়েছে করিমাকে। ভারতও সরব হয়েছে একই দাবিতে।
বালোচিস্তানের নারী আন্দোলনের মুখ ছিলেন করিমা। সেদেশে প্রবল জনপ্রিয় তিনি। গত রবিবার থেকেই মিলছিল না খোঁজ। ওই দিন দুপুর তিনটের পর থেকে তাঁকে কেউ দেখেনি। অবশেষে তাঁর পরিবারের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে মৃত্যুর বিষয়টি। টরন্টো পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, তারা করিমার মৃত্যুতে কোনও সন্দেহজনক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পায়নি। আর এখানেই আপত্তি পাক বিরোধী গোষ্ঠীগুলির। তাদের দাবি, পাক কর্তৃপক্ষের তরফে করিমাকে যে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, সেকথা মাথায় রেখে করিমা বালোচের মৃত্যু নিয়ে অনেক বিস্তারিত তদন্তের প্রয়োজন। মূল অপরাধীদের যত দ্রুত সম্ভব চিহ্নিত করে তাদের কানাডার আইন মেনে সাজা দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে। প্রসঙ্গত, এখনও করিমা বালোচের দেহের ময়নাতদন্তও হয়নি বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন : আফগানিস্তানের কাবুলে ফের বোমা বিস্ফোরণ, মৃত ৪ চিকিৎসক-সহ পাঁচ]
বালোচ ন্যাশনাল মুভমেন্ট, বালোচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি কানাডা, পাস্তুন কাউন্সিল কানাডার মতো বহু পাকবিরোধী গোষ্ঠী মিলে ওই যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। তাদের দাবি, এই মৃত্যুর সঙ্গে মিল রয়েছে বালোচ সাংবাদিক সাজিদ হোসেনের খুনের। সাজিদের হত্যাকে ‘ঠান্ডা মাথার খুন’ বলে উল্লেখ করে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘‘করিমা বালোচের খুন আমাদের সাজিদ হোসেনের মৃত্যুর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, সাজিদও পাকিস্তানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় সুইডেনে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত বহু দিন নিখোঁজ থাকার পরে তাঁর মৃতদেহের সন্ধান মেলে।
সুইৎজারল্যান্ডে রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনে ইমরান প্রশাসনের আগ্রাসনের ইস্যুটি সকলের সামনে তুলে ধরেছিলেন ‘বালোচ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন আজাদ’-এর সভাপতি করিমা। ২০১৬ সালে বিবিসি প্রকাশিত সারা বিশ্বের ১০০ জন সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলাদের তালিকায় নাম ছিল তাঁর। এহেন করিমার মৃত্যু এক গুরুতর ঘটনা বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
[আরও পড়ুন : পাশবিক! জেলবন্দিদের খুন করে জৈব সার তৈরি করছেন কিম জং উন]
প্রসঙ্গত, গত ১৫ বছরে বালোচিস্তানের অস্থিরতা আরও বেড়েছে। অভিযোগ, সেখানে হাজার হাজার মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনা। ভারতও বালোচিস্তানের মানুষের উপর পাকিস্তানের নারকীয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বহুবার।