সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব কাঁপাচ্ছে চিনের উত্থান। সাগর থেকে নগরে লালফৌজের দাপট আন্তর্জাতিক মঞ্চে তৈরি করছে অচিন্তনীয় সমীকরণ। ফলস্বরূপ, রুশ নির্ভরতা কাটিয়ে ভারত এখন অনেকটাই আমেরিকা ঘেঁষা। এবার ‘ড্রাগনে’র বিরুদ্ধে অস্ত্রে শান দিতে বরফের রাজ্যে সামরিক মহড়া শুরু করেছে দুদেশের সেনাবাহিনী।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, বরফের রাজ্য আলাস্কায় সামরিক মহড়া শুরু করেছে ভারত ও আমেরিকার ফৌজ। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই মহড়ার পোশাকি নাম ‘যুদ্ধ অভ্যাস’। চলবে দুসপ্তাহ ধরে। লড়াইয়ের ময়দানে দুই মিত্র বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে তোলা এবং যুদ্ধের কৌশল ঝালিয়ে নেওয়াই এর উদ্দেশ্য। তবে এমন মহড়া এই প্রথম নয়। ২০০৪ সাল থেকেই দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে চলছে ‘যুদ্ধ অভ্যাস’। নজরে মূলত, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক উদ্দেশ্য সাধন ছাড়াও বেজিংকে বার্তা দেওয়াও এই মহড়ার অন্যতম উদ্দেশ্য।
[আরও পড়ুন: দিল্লির দূতাবাস বন্ধ করল আফগানিস্তান, কী চাইছে তালিবান?]
উল্লেখ্য, গালওয়ান সংঘর্ষের (Galwan) পর থেকেই বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে লাদাখ সীমান্ত। সংঘাতের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু গোগরা-হটস্প্রিং থেকে সেনা সরালেও দেপসাং সমতলে মজুত লালফৌজ। এই প্রেক্ষাপটে বেজিংকে কৌশলী বার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি ‘চিন বিরোধী’ জোটের সামরিক মহড়ায় শামিল না হলেও মালাবার নৌ-মহড়ায় অংশ নিয়েছে ভারত।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ২২ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত সামরিক মহড়া চালায় তেরোটি দেশ। অস্ট্রেলিয়ার পৌরহিত্যে এর পোশাকি নাম ‘ট্যালিসম্যান সেবার’ বা জাদু তলোয়ার’। ওই মহড়ায় অংশ নেয় আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও জাপানের মতো দেশগুলোর প্রায় ৩৪ হাজার সেনা। জলে, স্থলে, জঙ্গলে ও আকাশে যুদ্ধের কৌশল ঝালিয়ে নেয় তারা। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের ‘দাদগিরি’র মাঝে এই মহড়া বিশেষ বার্তাবহ। ট্যালিসম্যান সেবারে অংশ নিতে ভারতকে একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। কিন্তু চিনের গোঁসা হতে পারে ভেবেই নাকি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ভারত। তবে, ভারত মহাসাগর বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যে লালফৌজের গাজোয়ারি মেনে নেওয়া হবে না সেই বার্তা দিয়ে গত আগস্টে মালাবার মহড়ায় অংশ নেয় নয়াদিল্লি।