সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দু’দশকের খোলা হাওয়ার পর আফগানিস্তানে (Afghanistan) ক্ষমতায় ফিরেছে তালিবান। তবে গৃহযুদ্ধের জেরে বিধ্বস্ত দেশটির অর্থনীতি। চরম রাজনৈতিক ডামাডোলে বিপর্যয় নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের জীবনে। দেখা দিয়েছে প্রবল খাদ্য সংকট। এহেন পরিস্থিতিতে দুস্থ আফগানদের জন্য ত্রাণ পাঠাতে তৎপর ভারত, বৃহস্পতিবার মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করল রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। অবাধে ত্রাণ পৌঁছনোর এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
[আরও পড়ুন: ১৪টি প্রদেশে নতুন করে ছড়াচ্ছে করোনা, ওমিক্রন আতঙ্কে কড়া লকডাউনের সিদ্ধান্ত চিনে]
এই বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি বলেন, “আফগানিস্তানে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবকে সমর্থ জানিয়েছে ভারত। রাষ্ট্রসংঘের সংস্থাগুলিকে আফগানিস্তানে অবাধভাবে কাজ করতে দেওয়াটা জরুরি। আফগানিস্তানে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার আন্তর জাতিক মঞ্চের ডাকে সাড়া দিয়েছে ভারত। কিন্তু ত্রাণকার্য বধাহীন ভাবে হওয়া উচিত।” সবমিলিয়ে, ইঙ্গিতয়ে নয়াদিল্লি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে দুস্থ আফগাণ্ডের জন্য পাঠানো ত্রাণের টাকা যেন কোনওভাবেই জেহাদিদের হাতে না যায়।
রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তালিবানের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। তার মধ্যেই আগামী এক বছর ধরে আফগানিস্তানে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছবে। ত্রাণের তহবিল যাতে তালিবানের হাতে না পড়ে, প্রস্তাবে সে কথাও উল্লেখ করেছে আমেরিকা। কাজেই এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে আর্থিক সমন্বয়ের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। রাষ্ট্রসংঘের মানবিক সাহায্য বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি মার্টিন গ্রিফিথস জানান, এই প্রস্তাবের ফলে ১৬০টিরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আফগানদের জন্য খাদ্য ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সহায়তা পৌঁছে দিতে পারবে। ত্রাণ ঠিক জায়গায় পৌঁছচ্ছে কি না, তা পর্যালোচনা করে ছ’মাস অন্তর রিপোর্ট দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, তালিবানের (Taliban) দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানে দ্রুত ফুরিয়ে যেতে বসেছে খাদ্য ও অন্যান্য জীবনদায়ী রসদ। বিধ্বস্ত সেদেশের অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধজর্জর দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে গত অক্টোবর মাসে ১২০ কোটি ইউরো আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চিন ও তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই সেখানে ত্রাণ পাঠানো শুরু করেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘের মানবতা বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর জানিয়েছিল, দ্রুত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে আফগানিস্তান। রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র জেন্স লার্ক জেনেভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, সেদেশের লক্ষ লক্ষ আফগান নাগরিক বড় সমস্যার মুখে। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে।