রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: সাদা টি-শার্ট আর নীল ট্রাউজারে শনিবার বেলার দিকে রাহুল শরদ দ্রাবিড় (Rahul Dravid) ইডেনে ঢুকলেন যখন, দেখলে ক্রিকেট-মনের নস্ট্যালজিক হয়ে পড়া স্বাভাবিক। ক্রিকেট ইতিহাস বলে, ইডেন ঐতিহাসিক ভাবে দ্রাবিড়কে বরণ করে এসেছে। আবির্ভাবে সেঞ্চুরি। কুড়ি বছর আগে ভিভিএস লক্ষ্মণের সঙ্গে জুটি বেঁধে স্টিভ ওয়ার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অমর ১৮০, হলুদ জার্সির জয়-রথের মেদিনীগ্রাস সম্পন্ন করে। ক্লাবহাউসের বাইরের দেওয়ালে যে মহাকীর্তির চিত্রকর্যও রয়েছে। রবিবাসরীয় ইডেন উপস্থিত হবে তার প্রিয় সন্তানের কোচ হিসেবে প্রথম অনুচ্ছেদের পূর্ণতা দেখতে, প্রথম সিরিজে চুনকামের সাক্ষী থাকতে। সেই নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে, যারা আইসিসি টুর্নামেন্টে সম্প্রতি ভারত-ঘাতক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু টিম সাউদিরা নন। কোচ দ্রাবিড়কে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে সম্পূর্ণ অন্য এক ‘শত্রু’। যারা নেমে আসে আকাশ থেকে, ঝাঁকে ঝাঁকে দল বেঁধে। শিশির। বিশ্বকাপ থেকে যা চিন্তা ভারতীয় টিমের। প্রথম দু’টো টি-টোয়েন্টিতে ভারত (Team India) টস জিতেছে, তাই অসুবিধে হয়নি। কিন্তু ইডেনেও ভাল রকম শিশির পড়ছে। আর সিরিজ যতই জিতে থাকুন না কেন, কোচ দ্রাবিড় তাঁর প্রথম সফরে কোনও কলঙ্ক চান না। নইলে আর ইডেনে শিশিরের প্রভাব কমানো নিয়ে উঠেপড়ে লাগবেন কেন? এ দিন ভারতীয় টিম (Indian Cricket Team) শহরে পৌঁছে আর মাঠে আসেনি। কিন্তু সাপোর্ট স্টাফ টিম নিয়ে দ্রাবিড় ঘুরে গেলেন (জানা নেই, পূর্বতন টিম ম্যানেজমেন্ট থাকলে কী হত? সেই সময় তো ম্যাচের আগের দিন মাঠে যাওয়ার পাটই চুকিয়ে ফেলা হয়েছিল)। তা, পিচ দেখেটেখে সন্তুষ্ট দ্রাবিড় ইডেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করেন শিশির নিয়ে। এবং শিশির ভাল রকম পড়ে শুনে চিন্তিত ভাবে জিজ্ঞাসা করেন, কোনও ভাবে তার প্রভাব কমানো যায় কি না? কারণ নইলে টস যার, ম্যাচ তার।
[আরও পড়ুন: আগামী বছর আইপিএল হবে দেশের মাটিতে, জানিয়ে দিলেন BCCI সচিব জয় শাহ]
ইডেন কিউরেটর ভারতীয় কোচকে আশ্বস্ত করেন, সম্ভব। দড়ি দিয়ে বারবার জল টেনে বার করে, অ্যান্টি ডিউ স্প্রে চালিয়ে শিশিরের প্রভাব কমানো সম্ভব। কিন্তু তার জন্য ম্যাচ রেফারি এবং আম্পায়ারের সঙ্গে আগাম কথা বলে রাখা ভাল। কারণ, করোনা কালে একাধিক জৈব বলয় আর তার হাজারো নিয়ম। যেমন এই প্রথম, ক্লাবহাউস গেট দিয়ে মাঠে ঢুকবে না ভারতীয় টিম। ইডেনের সতেরো নম্বর গেটে একটা ‘গ্রিন করিডর’-এর বন্দোবস্ত থাকবে। সেখান দিয়ে মাঠে ঢুকবে দু’টো টিম। আর সেখানে কাকপক্ষীর প্রবেশাধিকার নেই।
[আরও পড়ুন: হাইভোল্টেজ ম্যাচের আগে ইডেনে বুর্জ খলিফার লেজার শো, দেদার চলছে টিকিটের কালোবাজারি]
শোনা গেল, পরের দিকে সেই বন্দোবস্ত নাকি হয়ে গিয়েছে দ্রাবিড়ের হস্তক্ষেপে। দেখা যাক এখন। ভালয় ভাল সব কিছু হোক। শিশির-শত্রুর বিনাশ ঘটুক। জিতুক ভারত। হোক চুনকাম। দুগ্গা, দুগ্গা!