সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লামিনে ইয়ামাল যদি ১৬ বছর বয়সে স্পেনের হয়ে ইউরো কাপ খেলতে পারে, তাহলে ভারতও একদিন বিশ্বকাপ খেলবে। এই বিশ্বাস আমি রাখি। দরকার নিজের উপরে বিশ্বাস।
মোহনবাগান দিবসে 'মোহনবাগান রত্ন' সম্মানে ভূষিত হয়ে আশার কথা শুনিয়ে গেলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
সৌরভ মানেই আশাবাদ। সৌরভ মানেই প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়াই। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের হাতে এদিন 'মোহনবাগান রত্ন' পুরস্কার প্রদান করার পাশাপাশি চেকও দেওয়া হয়। কিন্তু মহারাজ সেই চেক ক্লাবকে প্রদান করে বলেন, ক্লাবের ইউথ ডেভেলপমেন্টে সেই অর্থ যেন খরচ করা হয়।
সৌরভ মানেই নস্ট্যালজিয়া। মোহনবাগান সভাপতি স্বপনসাধন বসু স্মৃতি রোমন্থন করে বলছিলেন, ''স্পোর্টিং ইউনিয়নে না খেলে মোহনবাগানে খেলবে বলে এসেছিল ছেলেটা। অরুণ লালের বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল সৌরভকে। তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বীরেন সাহা আমাকে বলেছিলেন, তোমাকে তো গ্রেপ্তার করতে হবে। সৌরভের বাবা চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায় তোমার নামে নালিশ করে বলেছেন, তুমি নাকি ওকে কিডন্যাপ করেছো। আমি বললাম, তাই নাকি। তাহলে সৌরভের মায়ের সঙ্গে একবার ফোনে কথা বলে দেখুন। মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে মোহনাবাগানে খেলতে এসেছে সৌরভ।'' পাশে বসা সৌরভ তখন হাসছেন। ফিরে যাচ্ছিলেন হয়তো ফেলে আসা দিনে।
[আরও পড়ুন: শুরুতে পিছিয়েও বড় জয়, বিমানবাহিনীকে মাটি ধরিয়ে ডুরান্ডে দুরন্ত শুরু ইস্টবেঙ্গলের]
'মোহনবাগান রত্ন' সম্মান গ্রহণ করতে মঞ্চে উঠে সৌরভ বলেন, ''সারা পৃথিবীর মানুষ মোহনবাগানকে চেনেন। ২৯ জুলাই ঐতিহাসিক দিন। তবে আমি মোহনবাগান ক্লাবকে ১৯১১ সাল দিয়ে বিচার করি না। মোহনবাগানে বিভিন্ন সময়ে বহু রত্ন খেলে গিয়েছেন। তাঁদের জন্যই মোহনবাগান আজ এই জায়গায় পৌঁছেছে। মোহনবাগানে রত্নের সংখ্যা এতটাই বেশি যে আলাদা করে রত্ন খোঁজার জন্য পরিশ্রম করতে হয় না। আজ হয়তো আমার সময়। আগামীদিনে বহু কৃতি এই মঞ্চে উঠবেন বলেই বিশ্বাস রাখি।''
সদস্য-সমর্থকদের উদ্দেশে সৌরভ বললেন, ''শুধু জিতলেই হবে না। স্ট্যান্ডার্ডটা দেখতে হবে।'' এক নিঃশ্বাসে সৌরভ বলেন, ''ময়দান হার্টবিট। ময়দানে খেলার সততা যেন বজায় থাকে, সেটা দেখতে হবে। আর অর্থ দিয়ে খেলাধুলোর উন্নতি হয় না।''
মোহনবাগান দিবসে এদিন চাঁদের হাট বসেছিল মোহনবাগান তাঁবুতে। সেরা ফুটবলারের সম্মান পান দিমিত্রি পেত্রাতোস। তিনি অবশ্য ভিসা না পাওয়ায় এখনও শহর কলকাতায় পৌঁছতে পারেননি। সেরা ফরোয়ার্ডের সম্মান দেওয়া হয় মনবীর সিংকে। সেরা জুনিয়র ফুটবলার সুহেল ভাট। মরশুমে বারোশোর উপরে রান করায় সেরা ক্রিকেটার হন অভিলীন ঘোষ। সেরা সাপোর্টার বাপি মাজি ও অজয় পাসওয়ান। সেরা সাংবাদিক দেবাশিস দত্ত। সেরা কর্মকর্তা সৌরভ পাল। সেরা রেফারির পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় দিলীপ সেনকে। লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মানে ভূষিত হন প্রয়াত প্রাক্তন সবুজ-মেরুন অধিনায়ক বিমল মুখোপাধ্যায়। মোহনবাগানের প্রথম লিগ জয়ী অধিনায়ক তিনি।