সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দশ বছর পর বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ওমর আবদুল্লা। কিন্তু ভোটের পরেও শান্তি ফেরেনি উপত্যকায়। ফের গুলির লড়াইয়ে কেঁপে উঠল কাশ্মীর। শনিবার সকালে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে এনকাউন্টারে খতম ২ জঙ্গি। এখনও লুকিয়ে থাকা জেহাদিদের খোঁজে চলছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান।
নির্বাচনের আগে থেকেই উপত্যকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাড়িয়েছিল জঙ্গিরা। আলোর উৎসবেও রক্তাক্ত হয়েছে কাশ্মীর। গতকাল শুক্রবার দুই পরিযায়ী শ্রমিককে গুলি করে মারে জেহাদিরা। তার পরই যৌথ জঙ্গিদমন অভিযানে নামে কাশ্মীর পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনী। শ্রীনগরের খয়নার ও অনন্তনাগে জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর মেলে গোয়েন্দা সূত্রে। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। তাতেই মিলল সাফল্য। অনন্তনাগের হলকন গলি এলাকায় জওয়ানদের গুলিতে নিকেশ হয় ২ জেহাদি।
গতকাল জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারান ২৫ বছরের সোফিয়ান ও ২০ বছরের উসমান মালিক। দুজনেই সাহারানপুরের বাসিন্দা। তাঁরা কাজ করতেন কাশ্মীরের জলশক্তি দপ্তরে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসাবে। মাগাম এলাকায় তাঁদের উপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় জঙ্গিরা। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পৌঁছয় নিরাপত্তাবাহিনী। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। পাশাপাশি গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীনগরের জেভিসি হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁদের। এর আগে মাত্র ১২ দিন আগে গান্দেরবালে শ্রীনগর-লেহ জাতীয় সড়কে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের কাছে শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। সেই হামলায় এক চিকিৎসক-সহ ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর, ২৫ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর ৩ দফায় ভোটগ্রহণ হয় জম্মু ও কাশ্মীরে। ফল ঘোষণা হয় ৪ অক্টোবর। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন ওমর আবদুল্লা। এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি উপত্যকার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তবে তখন তা ছিল রাজ্য। ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারার অবলুপ্তির পর তা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়। আর এই ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছে পাকিস্তান বলে অভিযোগ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর। ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ করিয়ে নাশকতার চেষ্টা করছে তারা। সম্প্রতি এক গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়, জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সন্ত্রাসবাদী হামলার লঞ্চপ্যাডগুলো সক্রিয় করেছে পাক সেনা। সেখান থেকে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিরা ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।