সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছত্তিশগড়ে রাতভর নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে খতম ৪ মাওবাদী। সংঘর্ষে নিহত এক পুলিশকর্মীও। শনিবার বিকাল থেকে দন্তেওয়াড়া এবং নায়ারণপুর জেলার সীমানায় অবুঝমাড়ের জঙ্গলে অভিযান শুরু হয়। সেখান থেকে প্রচুর অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। লুকিয়ে থাকা বাকি মাওবাদীদের খোঁজে এখনও চলছে ব্যাপক তল্লাশি।
জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরেই নিরাপত্তা বাহিনী এবং ছত্তিশগড় পুলিশ চার জেলায় মাওবাদীদমন অভিযান চালাচ্ছে। এদিন গোপন সূত্রে অবুঝমাড়ের জঙ্গলে নকশালপন্থীদের লুকিয়ে থাকার খবর মেলে। তাদের নাশকতার ছক ভেস্তে দিতে শুরু হয় অভিযান। মাওবাদীদের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলিবর্ষণ শুরু করে নিরাপত্তারক্ষীরা। পালটা গুলি ছোড়ে নকশালপন্থীরা। আজ রবিবার সকালে পুলিশ জানিয়েছে, এই সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৪ জন মাওবাদী নিকেশ হয়েছে। নিহত হয়েছেন ডিসট্রিক্ট রিসার্ভ গার্ডের হেড কনস্টেবল সান্নু করম। ঘটনাস্থল থেকে AK-47 রাইফেল এবং সেলফ লোডিং রাইফেল (SLR)-সহ বেশ কিছু স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসের শুরুতে পুলিশের ‘চর’ সন্দেহে এক বিজেপি নেতাকে খুন করে বাড়ির সামনে ঝুলিয়ে দেয় মাওবাদীরা। নিহত কুদিয়াম মাঢ়ো জনজাতি গোষ্ঠীর বিজেপির জেলা কৃষক সংগঠনের সহ-সভাপতি ছিলেন। হত্যাকাণ্ড চালানোর পর কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ‘পুলিশের চর’দের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি লিফলেট ছড়িয়ে যায় মাওবাদীরা। তারপরই ছত্তিশগড়ের এই জঙ্গলে অভিযান চালায় পুলিশ ও সিআরপিএফ। ১২ ডিসেম্বর যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিকেশ হয় ৭ মাওবাদী।
প্রসঙ্গত, মাওবাদকে দেশ থেকে নির্মুল করতে কোমর বেঁধে নেমেছে কেন্দ্র। গত বছর এই বিষয়ে বার্তা দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, লড়াই এখন শেষ পর্যায়ে। চূড়ান্ত হামলার সময় এসেছে। ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে আমরা দেশ থেকে মাওবাদ নির্মূল করব।’’ এ যে নিছক মুখের কথা নয়, পরিসংখ্যানই তা স্পষ্ট করে দেয়। রিপোর্ট বলছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ২৬৪ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ৮৬১ জন গ্রেপ্তার ও ৭৮৯ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। নতুন বছরেও নকশালপন্থীদের কোমর ভাঙতে অভিযান জারি রয়েছে।