সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একজনের ভাবনা ছিল কেরিয়ারে ইতি টেনে ফেলার। চেয়েছিলেন, উড়ান চালানোর চাকরি ছেড়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে। বাবাকেও সেই ইচ্ছের কথা বলেছিলেন। আর অপরজনের কেরিয়া সবে শুরু হয়েছিল। উড়ানের সঙ্গে জড়িত পরিবারের ছেলেটির আকাশপথে আরও অনেকটা যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটা দুর্ঘটনা শূন্যে মিলিয়ে দিল দু'জনকে। বলা হচ্ছে, আহমেদাবাদের অভিশপ্ত AI 171 বিমানের পাইলট ও সহকারী পাইলটের কথা। অকালে দাঁড়ি পড়ে যাওয়া সুমিত সভরওয়াল ও ক্লাইভ কুন্দারের অদ্ভুত জীবন।
বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে ভেঙে পড়া অভিশপ্ত এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। ফাইল ছবি।
অভিশপ্ত বিমানের পাইলট সুমিত সভরওয়াল। মুম্বইয়ের পওয়াই এলাকার বাসিন্দা সুমিতের বাবা ছিলেন ডিজিসিএ-র প্রাক্তন অফিসার। দুই তুতোভাই বিমানচালক। পরিবারের এতজনকে এই পেশায় দেখেই নিজেও উড়ানের প্রতি আকৃষ্ট হন সুমিত। কঠোর পরিশ্রমের পর বেছে নেন পাইলটের পেশা। একাই ৮২০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। এবার ডানা গোটানোর ভাবনা ভেবেছিলেন সুমিত সভরওয়াল। বাবাকে বলেছিলেন, ''এবার চাকরিটা ছেড়ে তোমার দেখভাল করব।''
সুমিতের বন্ধু সঞ্জীব পাই অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার। তাঁর কথায়, ''ক্যাপ্টেন সুমিতের মতো শান্ত আর শান্তিপ্রিয়, আবার আরেকদিকে সুদক্ষ পাইলট আমাদের উড়ান জগতে খুবই কম। কোনওদিন ওকে নিয়ে কোনও অভিযোগ শুনতে হয়নি। না সহকর্মীদের সঙ্গে আচরণ, না যাত্রীদের সঙ্গে ব্যবহার, সবসময় খুব শান্ত ছিল। ওর এই মৃত্যু এয়ার ইন্ডিয়ার বড় লোকসান।''
অভিশপ্ত বিমানের চালক সুমিত সভরওয়াল।
অন্যজন কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্দার। মুম্বইয়ের বোরিভেলির বাসিন্দা ক্লাইভের পরিবার উড়ান পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর মা ছিলেন কেবিন ক্রু। মুম্বইয়েই ক্লাইভের উড়ানের ট্রেনিং, তারপর কাজে যোগ দেওয়া। কর্মজীবনের প্রথমার্ধ্বে নবযৌবনের উদ্যম তাঁর হাড়ে হাড়ে। ইতিমধ্যে ১১০০ ঘণ্টা বিমান চালিয়ে ফেলেছেন। হাসিখুশি ক্লাইভ ছিল প্রাণচঞ্চল। তিনিও সহকর্মীদের বেশ পছন্দেরই ছিলেন। কিন্তু মৃত্যুর অভিশাপ ক্লাইভের জীবনকে সংক্ষিপ্ত করে দিল। এক বিমান, দুই চরিত্রের দুই পাইলটকে একরেখায় মিলিয়ে দিল দুর্ঘটনা।
কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্দার।
