বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: অভিযোগ প্রমাণ হলে দলীয় স্তরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সংসদে বসে দলীয় সাংসদের ই সিগারেট সেবন প্রসঙ্গে বললেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ না দেখা পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করবেন না। এরপরেই বিজেপির তরফে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়। যদিও সংবাদ প্রতিদিন ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি। সেই ভিডিওতে দেখা যায় লোকসভার সাংসদ কীর্তি আজাদ নিষিদ্ধ ই সিগারেট সেবন করছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রথম সরব হন বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর।
সংসদের ভিতরে বসে ই-সিগারেট খাওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন অনুরাগ। নাম না করে তৃণমূলের সাংসদের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। সেই ইস্যুতেই বর্তমানে উত্তাল রাজনীতি। কাকে ইঙ্গিত করেছিলেন বিজেপি সাংসদ, তখন তেমন কিছু স্পষ্ট করা না হলেও, বুধবার বেলা গড়াতেই ফুটেজ প্রকাশ করা হয়। তাতে কীর্তি আজাদকে দেখা যায়। এই নিয়েই এবার মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ জানিয়ে দিলেন, ফুটেজ না দেখা পর্যন্ত তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। অভিযোগ প্রমাণ হলে দলীয় স্তরে পদক্ষেপ করা হবে।
প্রসঙ্গত, লোকসভার অধিবেশন কক্ষে বসে তৃণমূলের এক সাংসদ নিয়মিত ই-সিগারেট খান-এই অভিযোগ তুলেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর। বুধবার বিজেপির তরফে একটি ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করা হয়। এই আবহে তৃণমূলের বক্তব্য, পাঁচ সেকেন্ডের ঝাপসা ভিডিও বা মুখ ঢাকা কোনও ফুটেজ দেখে সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায় না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পার্লামেন্টে কম করে ১০০টা ক্যামেরা আছে। অফিশিয়াল ফুটেজ দিন, রিলিজ করুন। দরকার হলে দলীয় স্তরে তদন্তের ব্যবস্থা হবে। কারও স্পেকুলেশনের উপর মন্তব্য করব না।” তিনি এক ধাপ এগিয়ে নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙুল তোলেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “এই ইলেকশন কমিশন একটা করে হোয়াটসঅ্যাপ লিক করছে আর প্রশ্ন ছুড়ছে—এ ভাবে চলবে না। অফিশিয়াল স্টেটমেন্ট চাই।”
বিজেপির মুখপাত্র অমিত মালব্য এক্স-এ পোস্ট করে দাবি করেন, সংসদের ভিতরে ভেপ করতে দেখা যাওয়া তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদই। তাঁর অভিযোগ, সংসদের মতো সংবেদনশীল জায়গায় নিয়ম-কানুন অমান্য করে ই-সিগারেট ব্যবহার করা “চরম দুঃসাহস”। প্রাক্তন লোকসভার স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সময় থেকেই সংসদ ভবনের ভিতরে ধূমপানে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। তার আগে চোরাগোপ্তা ধূমপান চললেও নিষেধাজ্ঞার পর সংসদ চত্বরে বা সেন্ট্রাল হলে কড়াকড়ি তুলনামূলক কম। কিন্তু অধিবেশন কক্ষে বসে কোনও নেশার দ্রব্য গ্রহণ—বিশেষ করে ভেপিং—সংসদীয় শিষ্টাচারের পরিপন্থী বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। উল্লেখ্য, ভারতে ই সিগারেট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ২০১৯ সালের ইলেকট্রনিক সিগারেট নিষেধাজ্ঞা আইন অনুযায়ী ই সিগারেটের উৎপাদন, আমদানি, বিক্রি ও প্রচার—সবই বেআইনি। তা সত্ত্বেও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও কিছু খুচরো বাজারে এর উপস্থিতি নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। সংসদের ভিতরে ভেপিংয়ের অভিযোগ সেই বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিল।
