সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার CAA বিরোধী আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন ভারতীয় সেনা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। দেশজুড়ে আন্দোলনের নামে অশান্তি ছড়ানো, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর নিয়ে তিতিবিরক্ত সেনাপ্রধান অভিযোগ তুললেন, “সাধারণ মানুষকে ভুল দিকে চালনা করা হচ্ছে। পড়ুয়াদের নেতৃত্বে বিভিন্ন মিছিল থেকে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। এটা সঠিক নয়। হিংসা, অশান্তিতে নেতৃত্ব দেওয়া আদর্শ নেতাদের কাজ নয়। মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।” তবে সেনাপ্রধানের এই মন্তব্যের প্রতিবাদে পালটা সরব হয়েছেন CAA বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তাঁদের আরজি, সেনাপ্রধান রাজনীতি থেকে দূরে থাকুন।
বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন সেনা প্রধান। তাঁর কথায়, “সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে ভাল করে জানা প্রয়োজন। আইনটা পুরো পড়া দরকার।” প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে ওঠার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরই সেই বিল আইনে পরিণত হয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রতিবাদের ঝাঁজও। পড়ুয়া থেকে বর্ষীয়ান নাগরিক, শ্রমিক শ্রেণি থেকে রূপোলি পর্দার তারকা – একযোগে সকলে পথে নেমেছেন। বিতর্কিত আইন প্রত্যাহারে দাবিতে গলা মিলিয়েছেন সকলেই।
[আরও পড়ুন: ‘NPR করতে এলে ভুল তথ্য দিন’, কেন্দ্রের পরিকল্পনা রুখতে কড়া বার্তা অরুন্ধতী রায়ের়]
তবে সেই প্রতিবাদী স্বর রোধ করতে পুলিশ প্রশাসনের আগ্রাসী ভূমিকাও সমালোচিত হয়েছে। আন্দোলনে নেমে গোটা দেশে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২৬জন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আক্রান্ত হয়েছে পড়ুয়ারাও। তবু প্রতিবাদ চলছেই। বিক্ষুব্ধ জনতার অভিযোগ, ধর্মের উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভেদাভেদের চেষ্টা চলছে এই নতুন আইনের মাধ্যমে। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক চরিত্র বদলের চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। এই অশান্তি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিপিন রাওয়াত বলেন, “নেতৃত্বের অর্থ মানুষকে ভুল দিকে চালনা করা নয়।” কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা আন্দোলনে হিংসা ছড়াচ্ছে অভিযোগ করে সেনা প্রধানের মন্তব্য, “ইদানিং আমরা দেখছি বহু কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নেতৃত্ব বিভিন্ন মিছিল থেকে শহরে-শহরে হিংসা, অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছে। এটা একেবারেই সঠিক নয়।নেতারা তো মানুষকে সঠিক দিকে চালনা করবে। এখন তো বিপথে চালনা করছে।”
[আরও পড়ুন: ধর্ষণের নৃশংস বদলা, চোখে আঠা দিয়ে গলার নলি কেটে ধর্ষককে খুন নির্যাতিতার!]
তবে তাঁর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বামেরা কটাক্ষের সুরে বলছেন, “ উনি সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দিন না!” অন্যান্য বিরোধীদের আরজি, রাজনীতি থেকে দূরে থাকুন দেশের সেনাপ্রধান। সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ” নিজের পদের সীমা পেড়িয়ে সেনা প্রধানের এই মন্তব্য। আমরাও কি তাহলে সেনার রাজনীতিকরণের পথে হাঁটছি।” একই সুর AIMIM নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসির গলাতেও। হায়দরাবাদের সাংসদ বলেন, ‘প্রতিবাদের অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। এগুলো আম নাগরিক বিষয়। উনি নাগরিকদের বিষয়ে নাক গলাচ্ছেন কেন?’ ওয়েইসি আরও বলেন, ‘উনি তো মোদী সরকারকেই ছোট করছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজের ওয়েবসাইটে লিখিছেন, জরুরী অবস্থার সময় তিনি রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন। তবে সেনাপ্রধানের মতে কি সেটাও ভুল!’ এদিকে কংগ্রেস নেতা ব্রিজেশ কালাপ্পা টুইটারে লেখেন, ” সেনা প্রধান CAA বিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে কথা বলছেন। এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।”
The post ‘CAA নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে’, আন্দোলন নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেশের সেনাপ্রধানের appeared first on Sangbad Pratidin.