সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে ভারতের চাপে সুর নরম করল ASEAN। এবার নয়াদিল্লির সঙ্গে প্রায় এক দশক পুরনো বাণিজ্য চুক্তির পুনর্মূল্যায়ণ করতে রাজি হয়েছে বাণিজ্যিক গোষ্ঠীটি।
[আরও পড়ুন: নজরে চিন, এবার ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে রাশিয়াকে দলে টানতে তৎপর ভারত]
ভারতের অভিযোগ, প্রায় বছর দশেক আগে Association of Southeast Asian Nations বা ASEAN গোষ্ঠীর সঙ্গে স্বাক্ষরিত Comprehensive Economic Cooperation Agreement (CECA) বাণিজ্য চুক্তির দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। এই চুক্তিকে হাতিয়ার করে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারতে পণ্য পাঠাচ্ছে চিন। শুধু তাই নয়, চুক্তিটিতে ভারতে আমদানি হওয়া ASEAN দেশগুলির পণ্যে শুল্ক ছাড় দিলেও, ভারতীয় পণ্যের জন্য সেই অর্থে বাজার খুলছে না দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যিক গোষ্ঠীটি। উদ্ধাহরণস্বরূপ, ইন্দোনেশিয়া থেকে দেশে আমদানি হওয়া ৭৫ শতাংশ পণ্যে শুল্ক ছাড় দিয়েছে ভারত। কিন্তু প্রতিদানে মাত্র ৫০ শতাংশ ভারতীয় পণ্যে শুল্ক ছাড় দিয়েছে ওই দেশটি। একইভাবে জাপানি গাড়ি ও মোটরসাইকেলে মাত্র ৫ শতাংশ শুল্ক নেয় থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া। কিন্তু ভারতীয় গাড়ির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় ওই দেশগুলিতে ব্যবসা করতে সমস্যায় পড়ছে ভারতীয় গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাগুলি। একইভাবে অন্য ASEAN দেশগুলিও শুল্ক ছাড় সেই মতো দিচ্ছে না। শুধু তাই নয়, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি কাজে লাগিয়ে চিনা পণ্য ভারতের বাজের পৌঁছে দিচ্ছে ওই দেশগুলি। 'পয়েন্ট অফ অরিজিন' বা পণ্যের উৎসস্থল সংক্রান্ত কড়া আইন না থাকায় সেই পণ্য আমদানি ঠেকাতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে।
উপরোক্ত বিষয়গুলি নিয়ে ASEAN গোষ্ঠীর কাছে বেশ কয়েকবার অভিযোগও জানিয়েছে ভারত। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তারপরই বিগত কয়েকমাসের টানাপোড়েনের পর সম্প্রতি UPA সরকারের আমলে স্বাক্ষরিত CECA চুক্তি থেকে একতরফা বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় নয়াদিল্লি। আর এতেই মিলেছে অভিপ্রেত ফল। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে বাণিজ্য চুক্তির পুনর্মূল্যায়ণ করতে রাজি আছে তারা। উল্লেখ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একাধিক দেশ যেমন–ভিয়েতনাম, মায়ানমার, ব্রুনেই কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড Association of Southeast Asian Nations বা ASEAN গোষ্ঠীভুক্ত। সদস্য না হলেও এই গোষ্ঠীর পর্যবেক্ষক পদে রয়েছে ভারত। তবুও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে রাশিয়া ও জাপানের সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে তৎপর হয়েছে নয়াদিল্লি। ফলে রীতিমতো চাপ সৃষ্টি হয়েছে ASEAN গোষ্ঠীর উপর।