সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঋণ খেলাপিতে অভিযুক্ত পলাতক বিজয় মালিয়ার (Vijay Mallya) টাকা শোধের দাবি খারিজ করল সরকার ও ব্যাঙ্ক। সম্প্রতি দেশব্যাপী সাড়া ফেলে দেওয়া বিজয় মালিয়ার পডকাস্টের পালটা ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, মালিয়ার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে কিছু টাকা আদায় করা হয়েছে ঠিকই, তবে বকেয়া রয়েছে বিপুল টাকা। অঙ্কটা প্রায় ৭ হাজার কোটি।
দেশীয় উদ্যোগপতি রাজ শামানির পডকাস্টে (Raj Shamani Podcast) এসে সম্প্রতি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মালিয়া। যেখানে তিনি দাবি করেছেন, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন বটে, কিন্তু কোনও চুরি করেননি। তাঁকে আর যা-ই বলা হোক, চোর বলা যাবে না। মালিয়ার দাবি, ''৬২০০ কোটি টাকা ঋণের বদলে ব্যাঙ্ককে ১৪ হাজার কোটি টাকা শোধ করেছি।” মালিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া-সহ (SBI) একাধিক ভারতীয় ব্যাঙ্ক থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে ব্রিটেনে গা ঢাকা দিয়েছেন কিংফিশার এয়ারলাইন্সের কর্ণধার। ভারত সরকার ইতিমধ্যেই তাঁকে দেশে প্রত্যার্পণের আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে পলাতক মালিয়ার দাবি, ২০১৬ সালে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দেশ ছেড়ে বিদেশে গিয়েছিলেন শুধু। কিন্তু তারপর ফেরা হয়নি।
আত্মপক্ষ সমর্থনে মালিয়ার এহেন দাবির পালটা এবার সরকার ও ব্যাঙ্কের তরফে বিবৃতি সামনে এসেছে। সরকারি সূত্র দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালে যখন মালিয়ার বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপির মামলা দায়ের করা হয় সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে ৬৮৪৮ কোটি টাকা ঋণ খেলাপির অভিযোগ ছিল। সেটাই সুদ ও আসল মিলিয়ে দাঁড়ায় ১০,৯৩৩ কোটি। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সেই টাকার অঙ্ক বেড়ে হয়েছে ১৭,৭৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০,৮৫১ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই মালিয়ার স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে আদায় করেছে ব্যাঙ্ক। এখনও ৬৯৯৭ কোটি বকেয়া রয়েছে। ফলে মালিয়ার একতরফা দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে ব্রিটেনে বাস করছেন মালিয়া। তবে তাঁর দাবি, তিনি কোনও চুরি করেননি। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ২০০৮ সালে কিংফিশার বিমান সংস্থার বেহাল দশা হয়। সে কারণে ঋণ মেটাতে পারেননি। তবে সেটা চুরি নয়। পডকাস্টে রাজ শামানি প্রশ্ন করেন, এর পর কি ভারতে ফিরতে চান? জবাবে বিজয় মালিয়া বললেন, “আমাকে যদি আশ্বস্ত করা হয়, যে আমাকে স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে দেখা হবে। স্বচ্ছ্বভাবে জীবনযাপনের অধিকার দেওয়া হবে। তাহলে তিনি দেশে ফেরার ব্যাপারে ভাবতেই পারেন।” এ প্রসঙ্গে ভারতীয় জেলগুলির বর্তমান অবস্থা সংক্রান্ত ব্রিটেনের একটি হাই কোর্টের রায়ের কথাও মনে করান মালিয়া।
