সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নীহার রঞ্জন গুপ্তের উপন্যাসে 'কালো ভ্রমর' ছিল এক ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার। অদৃশ্য সেই খুনির হদিশ পেতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল গোয়েন্দা কিরিটি রায়কে। তবে বাস্তবে উপত্যকার মাটিতে জঙ্গিদের ঘুম ছোটাচ্ছে আর এক 'কালো ভ্রমর'। এ অবশ্য কোন মানুষ নয়, মাত্র ৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এক যন্ত্র। যার কাজ সকলের চোখ এড়িয়ে শত্রুর ঠিকানা খুঁজে বের করা। কার্যত অদৃশ্য এই মারণাস্ত্রই এখন জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমনে সেনার ব্রহ্মাস্ত্র হয়ে উঠেছে।
মাত্র ৩৩ গ্রাম ওজনের হাতের মুঠোয় চলে আসা এই যন্ত্র আসলে একটি ড্রোন। যার আসন নাম 'ব্ল্যাক হরনেট'। তবে দেখতে ছোট হলেও এর কাজ কিন্তু বিরাট। সেনা অভিযানে শত্রুর ঠিকানা খুঁজে বের করতে অপরিহার্য এই ছোট্ট ড্রোন। রিমোর্টের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত এই ড্রোন দেখতে অনেকটা হেলিকপ্টারের মতো। যার রেঞ্জ দু কিলোমিটার। মূলত জঙ্গলের মধ্যে শত্রুর অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে এর জুড়ি মেলা ভার। কার্যত অদৃশ্য থেকে শত্রুর উপস্থিতির লাইভ ভিডিও দেখাতে থাকে এই 'কালো ভ্রমর'। কাজ করে অটো পাইলট মোডেও।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরে একের পর এক অভিযানে এই ড্রোন ব্যবহার করছে সেনাবাহিনীকে। মিলেছে সাফল্যও। ড্রোনের দেখানো পথে অভিযান চালিয়ে নিকেশ হয়েছে একের পর এক জঙ্গি। তবে শুধু জম্মু ও কাশ্মীরে সেনা অভিযান নয়, দুর্যোগ প্রভাবিত এলাকায় সাধারণ মানুষকে উদ্ধার, কিংবা কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলায় কাউকে পণবন্দী করে রাখার মতো ঘটনায় বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে এই ড্রোন।
উল্লেখ্য, এই ড্রোনের নির্মাণ করেছে নরওয়ের প্রক্সি ডায়নামিক নামে এক সংস্থা। যার দৈর্ঘ্য মাত্র ১০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৩.৯৩ ইঞ্চি। এবং প্রস্থ মাত্র ২.৫ সেন্টিমিটার। একটানা ২০ মিনিট পর্যন্ত ওড়ানো যেতে পারে যন্ত্রটি। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার। তবে দেখতে ছোটখাট হলেও এর দাম সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। এক একটি ড্রোনের দাম ভারতীয় মুদ্রায় এক কোটি টাকা।