হেমন্ত মৈথিল, মহাকুম্ভ নগর: মহাকুম্ভ আবার স্বমেজাজে ধরা দিল আজ। বসন্ত পঞ্চমীতে তৃতীয় অমৃতস্নানে কোটি কোটি ভক্ত পবিত্র ত্রিবেণী সঙ্গমে ডুব দিলেন। এদিন কুম্ভে ডুব দিলে জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় বলে ভক্তদের বিশ্বাস। কর্ণাটক, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও ওড়িশা থেকে কোটি কোটি ভক্ত সঙ্গমে আসেন। এদিন ভোররাত থেকেই পুণ্যতিথিতে বহু আখড়ার সন্ন্যাসীরা পুণ্য স্নানে অংশ নেন। চারিদিকে তখন 'হর হর মহাদেব' ধ্বনি ধ্বনিত হতে থাকে। শুভ ব্রাহ্ম মুহূর্ত দিয়ে শুরু হওয়া এই পবিত্র ঘটনায় অংশ নিয়ে ভক্তরা আপ্লুত। এদিনও সঙ্গমের ঘাটে ভক্তদের স্নানের সময় আকাশপথে পুষ্পবর্ষণের বন্দোবস্ত ছিল রাজ্যের প্রশাসনের তরফে।
ভক্তরা মহাকুম্ভ সম্পর্কে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবকে 'ভিত্তিহীন' বলে উড়িয়ে দেন। আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানের মহিমায় মুগ্ধ ভক্তরা তাদের অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। কর্নাটকের হুবলির তীর্থযাত্রী রবি বলেন, "পুণ্যার্থীদের জন্য অসাধারণ ব্যবস্থা করা হয়। আচার অনুষ্ঠান থেকে স্নান পর্ব কোথাও কোনরকম অসুবিধা হয়নি।" রবির সহযাত্রী আর. ট্যাকসেল তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বলেন, "এই অমৃতস্নানের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলাম। এটি ভীষণ স্মরণীয় আমার কাছে।"
মহারাষ্ট্র থেকে ৩ হাজাক কিমি পথ অতিক্রম করে পবিত্র সঙ্গমে ডুব দেন আদিত্য শুক্লা। যোগী প্রশাসনের নির্বিঘ্ন ব্যবস্থার প্রশংসা করে তিনি বলেন, "সঙ্গম তীরে পৌঁছাতে কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়নি। প্রশাসন দক্ষ হাতে সবটা পরিচালনা করেছে।" মহারাষ্ট্রের সহদেবজি তাঁর ৯ বছরের ছেলে-সহ পরিবারকে নিয়ে সঙ্গমে এসেছেন। তিনিও পুলিশ প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বিবেক রাস্তোগি বলেন, "সঙ্গমে কোনরকম বিশৃঙ্খলা নেই। বরং কোটি কোটি ভক্ত শান্তিপূর্ণভাবে পবিত্র সঙ্গমে অংশ নিয়েছেন। মেলায় এদিন প্রায় ১৭০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন। ১২০০ এসআরএন হাসপাতাল তৈরি করা হয়। ৫০০ জন ডাক্তার এবং প্যারামেডিক্যাল স্টাফও ছিলেন।" কুম্ভমেলা জুড়ে এদিন নিরাপত্তাও ছিল কঠোর। পুলিশ, প্যারামিলিটারি ফোর্স, এনডিআরএফ এদিন মেলা চত্বরে জায়গায় জায়গায় মোতায়েন করা ছিল। এছাড়াও লখনউয়ের ওয়ার রুমে এসএসপি, ডিআইজি সহ একাধিক কর্তারা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখেন।
