সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:
সাধারণত পুলিশ, সাইবার শাখা, সিবিআই বা অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিক সেজে ফোন করে অনলাইনে গ্রেপ্তারির ভয় দেখিয়ে এত দিন প্রতারণার কারবার সীমিত ছিল। এ বার তা আরও একধাপ এগোল! দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সেজে এক বৃদ্ধাকে 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' করল প্রতারকেরা। ওই বৃদ্ধার অভিযোগ, প্রতারণার শিকার হয়ে তিন কোটি টাকা খুইয়েছেন তিনি।
প্রতারিত হওয়া ওই বৃদ্ধা মুম্বইয়ের আন্ধেরি পশ্চিমের বাসিন্দা। পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর কাছে প্রথম ফোনটি আসে গত অগস্ট মাসে। পুলিশের নাম ভাঁড়িয়ে ওই ফোনটি করা হয়েছিল তাঁকে। তার পর থেকেই হোয়াট্সঅ্যাপে ভিডিওকল আসা শুরু হয় বিভিন্ন নম্বর থেকে। সেই সব ভিডিওকলেই বৃদ্ধাকে বলা হয়, তাঁর আধার কার্ড ব্যবহার করে একটি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বৃদ্ধা জানিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে তাঁর কোনও অ্যাকাউন্টই নেই। এর পরেই তাঁকে পুলিশে দায়ের হওয়া একটি অভিযোগপত্র পাঠানো হয়। তাতে সিবিআইয়ের লোগোও ছিল। তার পরেই বৃদ্ধা এবং তাঁর পরিবারকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিতে থাকে প্রতারকেরা।
পুলিশকে বৃদ্ধা জানান, প্রতারকেরা তাঁকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে রেখেছিল। তার পর আবার একটি ভিডিওকল আসে। সেই ভিডিওকলেই এক ব্যক্তি প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় সেজে এসেছিলেন। তিনিই বৃদ্ধাকে জানান যে, তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে। এর পরেই বৃদ্ধাকে পরিত্রাণের উপায় বাতলে দেয় প্রতারকেরা। তাঁর যত নগদ টাকা রয়েছে, আরটিজিএস-এর মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয় তাঁকে। ভাঙতে বলা হয় মিউচুয়ার ফান্ডও। প্রতারকদের কথা মতো তা-ই করেন বৃদ্ধা। সব মিলিয়ে ৩.৭১ কোটি টাকা প্রতারকদের দিয়েছেন। পরে প্রতারকেরা আরও টাকার দাবি করতেই বৃদ্ধা বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
সাইবার সেলে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি প্রতারকদের সঙ্গে ফোন কথোপকথনের সমস্ত তথ্যই তিনি তদন্তকারীদের হাতে তুলে দিয়েছেন। ঠিক কখন কখন ফোন এসেছিল, কত ক্ষণ ধরে কথা হয়েছে এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যই তিনি দিয়েছেন পুলিশকে।
