সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাত তুলে গালিগালাজ! প্রতিবাদ করেছিলেন পড়ুয়া। তাতেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপানোর অভিযোগ ওঠে একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। দেরাদুনে ত্রিপুরার যুবকের খুনের ঘটনায় এবার মুখ খুললেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সোমবার এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটি একটি অপরাধ। তার দাবি ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতারা এমন ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করেছে যেখানে হিংসার ঘটনা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে মানুষের মধ্যে।
কংগ্রেস সাংসদ বলেন, 'দেরাদুনে অ্যাঞ্জেল চাকমা এবং তার ভাই মাইকেলের সঙ্গে যা ঘটেছে তা একটি ভয়াবহ অপরাধ। ঘৃণা রাতারাতি প্রকাশ পায় না। বছরের পর বছর ধরে প্রতিদিন, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, টক্সিক বিষয়বস্তু চালানো হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতৃত্ব, যারা ঘৃণাকে প্রশ্রয় দেয়, তাঁরা একে স্বাভাবিক করে তুলছে।' তিনি আরও বলেন, "ভারত শ্রদ্ধা ও ঐক্যের উপর নির্মিত, ভয় ও নির্যাতনের উপর নয়। আমরা ভালোবাসা ও বৈচিত্র্যের দেশ। আমাদের এমন একটি মৃত সমাজে পরিণত হওয়া উচিত নয় যেখানে সহ-ভারতীয়দের আক্রমণ করা হলে তারা অন্যদিকে তাকিয়ে থাকবে।"
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম অ্যাঞ্জেল চাকমা। বয়স ২৪ বছর। তিনি ত্রিপুরার বাসিন্দা। দেরাদুনের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, গত ৯ ডিসেম্বর তিনি ও তাঁর দাদা মাইকেল চাকমা বাজারে গিয়েছিলেন। কিছু ঘরোয়া সামগ্রী কিনছিলেন তাঁরা। সেই সময় কয়েকজন মদ্যপ যুবক বর্ণবিদ্বষী মন্তব্য করতে থাকেন। তার প্রতিবাদ করেন অ্যাঞ্জেল। বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। অভিযোগ সেই সময়, হঠাৎ ধারালো অস্ত্র দিয়ে চাকমা ভাইদের উপর আক্রমণ করে দুষ্কৃতীরা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর পাশাপাশি লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। অ্যাঞ্জেল রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন যুবক। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় অ্যাঞ্জেলের। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অ্যাঞ্জেলের মাথা ও ঘাড়ে গভীর আঘাত লেগেছিল।
ছয় অভিযুক্তের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে নেপালের কাঞ্চনপুর জেলার বাসিন্দা যজ্ঞরাজ অবস্থি পলাতক। পুলিশ তাঁর খোঁজ দেওয়ার জন্য ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। নেপালেও একটি পুলিশের দল পাঠানো হয়েছে।
