সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতকাল দিল্লিতে (Delhi) বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভায় ঘৃণাভাষণের অভিযোগ উঠেছিল। একটি সম্প্রদায়ের মানুষের মাথা কেটে নেওয়ার নিদান দিয়েছিলেন জনৈক ভিএইচপি (VHP) নেতা। সোমবার রাজধানীতে ওই সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধেই সামাজিক বয়কটের ডাক দিলেন বিজেপি (BJP) বিধায়ক প্রভাস সাহিব সিং ভর্মা (Parvesh Sahib Singh Verma)। মনে করা হচ্ছে গেরুয়া বিধায়কের আক্রমণের লক্ষ্য ছিল মুসলিম সম্প্রদায়। আমজনতার প্রতি ওই নেতার প্রস্তাব, ‘এদের সোজা করতে সামাজিক বয়কট করুন।’
সোমবার বৃষ্টির মধ্যেও রাজধানীতে গেরুয়া বিধায়ক প্রভাস সাহিব সিং ভর্মার বক্তব্য শুনতে উপস্থিত হয়েছিলেন বেশকিছু মানুষ। তাঁদের উদ্দেশে বিধায়কের পরামর্শ, “ওদের সবজি কিনবেন না। ওরা মাছ-মাংসের দোকান খুলে বসবে। লাইসেন্স না থাকলে ওইসব দোকান বন্ধ করতে হবে, পুরসভাকে এই বিষয়ে জানাবেন।” প্রভাস বলেন, “ওদের শায়েস্তা করা তথা সোজা করার একটাই রাস্তা, তা হল সম্পূর্ণ বয়কট। আমার প্রস্তাব সমর্থন করলে হাত তুলে জানান।” নেতার কথায় সকলেই হাত তুলে সায় দেন। বিজেপি বিধায়ক ওই সম্প্রদায়ের যুবকদের কাজ দিতেও বারণ করেন। বলেন, “আমরা ওদের চাকরিতে নিয়োগ করব না।”
[আরও পড়ুন: কুস্তিগির থেকে মুখ্যমন্ত্রী, রাজনৈতিক ‘প্যাঁচে’ই বহুবার বিরোধীদের কুপোকাত করেছেন মুলায়ম]
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গুর্জরও ছিলেন প্রভাস ভর্মার সভায়। সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে নন্দ কিশোর যে মন্তব্য করেন, তার নিন্দা হচ্ছে সামাজিকমাধ্যমে। নন্দ কিশোর বলেন, “আমাদের সুন্দর শহরটা শুকর ছানায় ভরে গিয়েছে।” এদিকে প্রভাসের ‘সামাজিক বয়কট’ মন্তব্যে জলঘোলা হওয়ায় নেতা বলেন, “আমি কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নাম করিনি। যে সব পরিবারের সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের বয়কট করতে বলেছি।”
এদিকে বিজেপি বিধায়ক প্রভাস ভর্মার বিতর্কিত বক্তব্যের ভিডিও টুইট করছেন আসাদউদ্দিন ওয়েসি (Asaduddin Owaisi)। ভিডিও দেখে বহু নেটিজেন প্রভাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন। যদিও প্রভাসের বক্তব্যের সমর্থকও মিলেছে। সব মিলিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি যে কার্যকর হচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরে রাতভর গুলির লড়াই, অনন্তনাগে নিকেশ ২ জঙ্গি]
প্রসঙ্গত, গতকাল ভিএইচপির জনসভায় জগৎগুরু যোগেশ্বর আচার্য (Jagat Guru Yogeshwar Acharya) বলেন, যারা আপনাদের উপরে হামলা চালাতে পারে, তাদের হাত কেটে নিন, মাথা কেটে নিন। বড়জোর জেল হবে। কিন্তু ওদের শিক্ষা দেওয়ার সময় হয়েছে। বেছে বেছে হত্যা করতে হবে এদের। অন্যদিকে মহান্ত নওয়াল কিশোর দাস (Mahant Nawal Kishore Das) জানান, লাইসেন্স থাকুক আর না থাকুক সঙ্গে বন্দুক রাখতে হবে। তাঁর কথায়, বন্দুক জোগাড় করুন, লাইসেন্স করান। লাইসেন্স না থাকলেও কিছু এসে যায় না। যারা আপনাকে হত্যা করতে আসবে তারা কি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক নিয়ে আসবে? ফলে আপনারই বা লাইসেন্সের প্রয়োজন কোথায়?