সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডিগ্রি বিতর্কে অবশেষে স্বস্তি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের। সোমবার দিল্লি হাই কোর্ট রায় দিয়েছে যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্নাতক ডিগ্রির তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য নয়। পাশপাশি ডিগ্রি প্রকাশের বিষয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনারের নির্দেশও বাতিল করে দিয়েছে আদালত। বিচারপতি শচীন দত্ত এই রায় দিয়েছেন।
শুনানির সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেন, আরটিআই-এর আবেদন খারিজ হওয়া উচিত কারণ, ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে গোপনীয়তার অধিকার, তথ্য জানার অধিকারের তুলনায় বড়। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তি দেয়, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বাস করে সেখানে নিজেদের তথ্য রাখে। বৃহত্তর জনস্বার্থ যদি না থাকে তাহলে 'নিছক কৌতূহল' মেটানোর জন্য তথ্যের অধিকার আইনে, কারওর ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাওয়া অনায্য। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, আদালত চাইলে প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়া হবে। কিন্তু আরটিআই করলেই কোনও -অচেনা ব্যক্তির হাতে এভাবে তথ্য তুলে দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে আরটিআই কর্মী নিরজ কুমারের তরফে আইনজীবী দাবি করেন, বৃহত্তর জনস্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য জনসমক্ষে আনা উচিত। তিনি আরও দাবি করেন, আরটিআই-এর মাধ্যমে যে তথ্য চাওয়া হয়েছে তা সাধারণত যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশ করে এবং নোটিশ বোর্ড, ওয়েবসাইট এমনকি সংবাদপত্রেও প্রকাশ করা হয়।
আরটিআই কর্মী নিরজ কুমার ১৯৭৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের পড়ুয়াদের তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তথ্য জানাতে অস্বীকার করায় কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের কাছে আবেদন জানান নিরজ। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে কমিশন এই তথ্য প্রকাশ্যে আনার নির্দেশ দেয়। এপরেই ২০১৭ সালে আদালতের দ্বারস্থ হয় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম শুনানিতেই কমিশনের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী মোদির শিক্ষাগত যোগ্যতাকে বার বার চ্যালেঞ্জ করেছে বিরোধীদলগুলি। আপের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলি মোদির ডিগ্রির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও বিজেপি ডিগ্রির কপি প্রকাশ করেছে এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় বৈধতা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু এরপরেও অব্যাহত ছিল আইনি লড়াই। সোমবারের রায় এই লড়াইয়ের অবসান করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
