সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্ত্রীর বয়স যদি ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে হয়, তাহলে তাঁর অসম্মতিতে তাঁর সঙ্গে স্বামী সঙ্গম করলে তা ধর্ষণ (Rape)। এবং ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে সেটা অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনা এমনই প্রস্তাব দিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে। তাঁর দাবি, এর ফলে পকসো (POCSO) আইনে এই সংক্রান্ত যে অসঙ্গতি রয়েছে তা দূর হবে।
ঠিক কী জানানো হয়েছে ওই প্রস্তাবে? জানা যাচ্ছে, সাক্সেনার প্রস্তাব ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারার ২ উপধারাটিকে বাতিল করতে হবে। ওই ধারায় বলা আছে, যদি কোনও ১৫-১৮ বছরের নাবালিকার বিয়ে হয় এবং স্বামী স্ত্রীর সম্মতি ছাড়াই সঙ্গম করেন তাহলে তা ভারতীয় দণ্ডবিধিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে না। এই আইনেরই পরিবর্তন চান সাক্সেনা। যদি সত্য়িই তাই করা হয়, তাহলে এবার নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে জোর করে সঙ্গম করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে স্বামীকে।
[আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় কে-পপের অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা, পদপিষ্ট হয়ে জ্ঞান হারালেন ৩০ জন]
উল্লেখ্য, গত মার্চে এক মামলার রায়ে কর্ণাটক হাই কোর্ট জানিয়েছিল।‘বিয়ে মানেই নৃশংস পাশবিক প্রবৃত্তির লাইসেন্স নয়।’ আসলে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রদেশ, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ইজরায়েল, ফ্রান্স, সুইডেন, ডেনমার্কের মতো বহু দেশে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হলেও ভারতে এখনও এটিকে অপরাধ হিসেবে দেখা হয় না।
তবে শীর্ষ আদালতে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া সত্বেও গত সেপ্টেম্বরে এক ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়ে দেয় দেশের সব মহিলা নিরাপদ এবং আইনি গর্ভপাতের (Abortion) অধিকারী। এই বিষয়ে বিবাহিত এবং অবিবাহিত মহিলার মধ্যে কোনওরকম পার্থক্য করা অসাংবিধানিক। এইসঙ্গে শীর্ষ আদালত মন্তব্য করে, ‘বৈবাহিক ধর্ষণে’র (Marital Rape) কারণেও গর্ভপাতের প্রয়োজন হতে পারে। ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ও ‘ধর্ষণ’ গর্ভপাতের ক্ষেত্রে। শীর্ষ আদালতের এই মন্তব্যকে উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করা হচ্ছে। এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে ১৫-১৮ বছরের নাবালিকা স্ত্রীদের জোর করে সঙ্গম করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধের আইন করার প্রস্তাব দিল্লির উপরাজ্যপালের।