সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগপুরে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় এবার যোগী নীতি মহারাষ্ট্র সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, এই হিংসায় সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষয়তির হিসেব দাঙ্গাকারীদের থেকে বুঝে নেবে সরকার। যত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা মেটাতে হবে অপরাধীদের। বাজেয়াপ্ত করা হবে সম্পত্তি। প্রয়োজন পড়লে চলবে বুলডোজার।

উল্লেখ্য, মোগলসম্রাট ঔরঙ্গজেবের কবর সরানোর দাবিতে মহারাষ্ট্রে বিক্ষোভ শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। তেমনই এক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গত ১৭ মার্চ অশান্তি চরম আকার নেয় নাগপুরে। গুজব ছড়ায়, ওই বিক্ষোভে একটি বিশেষ ধর্মগ্রন্থ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সেই গুজবকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। একের পর এক গাড়ি পোড়ানোর পাশাপাশি পুলিশের উপর চলে হামলা। পরিস্থিতি সামাল দিতে জারি করা হয় কারফিউ। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস বলেন, এখনও পর্যন্ত এই হিংসার ঘটনায় ১০৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে চলছে গ্রেপ্তারি। যারা সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়াচ্ছে তাদেরও রেহাত করা হবে না। এমনকী এই হিংসায় বাংলাদেশ যোগের যে তত্ত্ব সামনে আসছিল তা উড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস জানান, ''যারা এই হিংসার ঘটনায় যুক্ত ছিল তাদের কোনওভাবেই রেহাত করবে না সরকার। যারা সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করেছেন এবং যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তার প্রতিটি পয়সা দাঙ্গাবাজদের কাছ থেকে উসুল করা হবে। যদি কেউ টাকা দিতে না পারেন, তবে তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।'' প্রয়োজনে অপরাধীদের বাড়িতে বুলডোজার চালানো হবে বলেও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফড়ণবিস।
উল্লেখ্য, দেশে এই বুলডোজার নীতির সূত্রপাত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের হাত ধরে। অভিযোগ, রাজ্যের কেউ যোগী সরকারের কোপে পড়লে তাঁর বাড়িতে চলত এই বুলডোজার। অভিযোগ ওঠে, বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের উপরই এই বুলোডোজার নীতি ব্যাপকভাবে প্রযোজ্য ছিল। দিনের পর দিন এই ঘটনায় শেষে আদালতের কোপে পড়ে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তাতে অবশ্য পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি। পরে বিজেপি শাসিত বাকি রাজ্যগুলিতেও দেখা যায় একই ঘটনা। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কেউ অপরাধী কিনা তা বিচার করে আদালত। বিচারের আগেই কীভাবে কারও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত বা তাঁর বাড়িতে বুলডোজার চালাতে পারে সরকার? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় শাসকদলের কোপে পড়লেই সরকার অভিযুক্তকে অপরাধী বলে দাগিয়ে দেয়। যা বেআইনি। এবার মহারাষ্ট্র সরকারের এই বুলোডোজার নীতিতেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।