বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিশেষ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলার মাঝেই পাঁচ রাজ্যের ভোট প্রস্তুতি শুরু করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। পাঁচ তারিখ ভোটমুখী রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। মূলত, ভোট ঘোষণার আগে ফুল বেঞ্চের রাজ্য পরিদর্শন, সর্বদলীয় বৈঠক, ভোটের নির্ঘণ্ট, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও এই পাঁচ রাজ্যের ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
আর কয়েকদিন কাটলেই নতুন বছর। আর ২০২৬ সাল পশ্চিমবঙ্গবাসীর জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বছরই বিধানসভা নির্বাচন। এই মুহূর্তে রাজ্যে চলছে এসআইআরের কাজ। তা চলবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। ১৪ তারিখ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ। তবে তার আগে জানুয়ারি মাসেই বড় বৈঠক করতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন সংক্রান্ত বৈঠক হতে চলেছে দিল্লিতে। রাজ্যের পুলিশ নোডাল অফিসার আনন্দ কুমার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি, পাঁচ রাজ্যের সিইও-সহ নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হতে পারে ওই বৈঠকে।
এর আগে ২৫টি এজেন্সির সঙ্গে ভোট প্রস্তুতির বৈঠকে বসেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ওই বৈঠকে ছিলেন সিআইএসএফ-এর এয়ারপোর্ট ডিআইজি অজয় কুমার, আরপিএফ-এর চিফ সিকিউরিটি কমিশনার, বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি ভূপেন্দ্র যাদব এবং রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের সচিব আইএএস সৌমিত্র মোহন হাজির ছিলেন। ঘটনা হল, লোকসভা হোক বা বিধানসভা, ভোটের আগে এই এজেন্সিগুলিকে কাজে লাগায় কমিশন। নজরে রাখে কোথাও কোনও বেআইনি কারবার, পাচার বা লেনদেন হচ্ছে কিনা। তাই এই প্রস্তুতি বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, গত ৪ নভেম্বর থেকে এই রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আগে বলা হয়েছিল, ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এনুমারেশন ফর্ম নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। ৯ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং ২০২৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। তবে নতুন ঘোষণায় গোটা প্রক্রিয়াই সাত দিন করে পিছিয়ে দেওয়া হয়। এনিউমারেশন ফর্ম জমা নেওয়া এবং কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করার প্রক্রিয়া শেষ করতে হয়েছে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে। ১২ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলেছে খসড়া ভোটার তালিকা প্রস্তুত করার কাজ। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। এই তালিকা সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ, আপত্তি কমিশনে জানানো যাবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এই মুহূর্তে খসড়া তালিকার সমস্ত আপত্তি, অভিযোগ এবং দাবি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা, বিতর্কের নিষ্পত্তি করা, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে শুনানিতে ডাকা এবং আলোচনার সাপেক্ষে সন্দেহ দূর করার কাজ ইআরও-রা করছেন, এই কাজ চলবে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোটার তালিকা ভাল করে খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত করার জন্য কমিশনের অনুমতি নিতে হবে। তার পর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি।
