সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেরলের ভোটের মুখে ফের শিরোনামে শবরীমালা মন্দির! ৬ বছর আগে কেরলের বিখ্যাত আয়াপ্পা মন্দিরের চার কেজি সোনাচুরির ঘটনায় এবার খোদ সোনিয়া গান্ধীর নাম জড়িয়ে দিল সিপিএম। খোদ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন অভিযোগ করলেন, শবরীমালার সোনাচুরিতে মূল অভিযুক্তের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল কংগ্রেসের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভানেত্রীর। এমনকী তাঁদের একসঙ্গে ছবিও আছে।
শবরীমালার সোনাচুরির ঘটনা ২০১৯ সালের। সেসময়ে মন্দিরের বিগ্রহ এবং দরজার সোনার আবরণ মেরামতির জন্য সেগুলিকে কেরল থেকে তামিলনাড়ুতে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, সেসময় প্রায় ৪ কেজি সোনা উধাও হয়ে যায়। সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, সেই সোনাচুরির মূল অভিযুক্ত উন্নিকৃষ্ণণ পত্তি। তিনি বিগ্রহ মেরামতির কাজে সাহায্য করছিলেন। ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই মন্দিরের দ্বারপালক মূর্তি এবং দরজার সোনার আবরণ খোলা হয়েছিল। সেই সময় সোনার ওজন ছিল ৪২.৮ কেজি। পরে উন্নিকৃষ্ণণ পত্তির হাত ধরে সোনা যায় চেন্নাইয়ের এক সংস্থায়। কিন্তু সেই সোনা চেন্নাইয়ে পৌঁছোয় ৩৯ দিন পর। সেসময় ওজন করে দেখা যায় ৪.৫৪ কেজি সোনা উধাও। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, ওই সোনা সরাসরি চেন্নাইয়ে যায়নি। নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কেরলের কোট্টায়াম মন্দির, অন্ধ্রপ্রদেশের কয়েকটি মন্দির, বেঙ্গালুরুর আয়াপ্পা মন্দিরে। মালয়ালম অভিনেতা জয়রামের বাড়ির পুজোতেও সোনার আবরণ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাতেই মাঝপথে এই বিপুল সোনা উধাও হয়ে যায়। মূল অভিযোগ ওই উন্নিকৃষ্ণণ পত্তি এবং গোবর্ধন নামের এক সোনা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
এই কাণ্ডের তদন্তে ইতিমধ্যেই সিট গঠন করেছে কেরল হাই কোর্ট। আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যে তারা সিটকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে। ইতিমধ্যে পত্তি, গোবর্ধনকে গ্রেপ্তার করেছে সিট। কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, মন্দিরের এই সোনাচুরির সঙ্গে সরাসরি যোগ থাকতে পারে সোনিয়া গান্ধীর। কারণ এক সময় সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল উন্নিকৃষ্ণণ পত্তির। বিজয়নের বক্তব্য, "সোনিয়া গান্ধী এমন একজন ব্যক্তি যার নিরাপত্তা খুব কড়া। কংগ্রেসের অনেক বড় নেতাও তাঁর সাক্ষাৎ পান না। তাহলে এই সোনাচুরি মামলায় অভিযুক্ত কীভাবে তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেলেন?" বিজেপি আবার একই সঙ্গে নিশানা করেছে কংগ্রেস এবং সিপিএমকে। তাঁরা বলছে, শবরীমালায় চুরির ছক কষা হয়েছিল কংগ্রেস আমলে। সেটা প্রতিপালন হয়েছে সিপিএম আমলে। এটা যৌথ ষড়যন্ত্র। কোনও কেন্দ্রীয় এজেন্সির উচিত এই ঘটনার তদন্ত করা।
শবরীমালার সোনাচুরির ঘটনায় সোনিয়া গান্ধী আদৌ যুক্ত কিনা, সেটা তদন্ত সাপেক্ষ। কিন্তু এই মামলায় সরাসরি সোনিয়ার নাম জুড়ে দিয়ে সিপিএম এক তো কংগ্রেসের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্তরের সুসম্পর্কের ক্ষতি করে ফেলল। একই সঙ্গে বুঝিয়ে দিল, দিল্লিতে দোস্তি হলেও কেরলের কুস্তিতে জমি ছাড়বে না তাঁরা।
