নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের পর এই ঐক্যের ছবি বিশেষ দেখা যায়নি। যেটা মঙ্গলবার দেখা গেল সংসদ ভবনে। ওয়াকফ বিল বিরোধিতাকে সামনে রেখে ফের ঐক্যবদ্ধ বিরোধী শিবির। একযোগে কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ওই আইন আটকে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ইন্ডিয়া জোট।
ওয়াকফ ইস্যুতে অবস্থান কী হবে? ঠিক করতে মঙ্গলবার সংসদে সব বিরোধী দল বৈঠকে বসেছিল। কংগ্রেস, তৃণমূল, আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি, বাম দলগুলি ছাড়াও বিরোধী শিবিরের প্রায় সব দল তাতে অংশ নেয়। মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধীদের, পাশাপাশি তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএমকের টিআর বালুর মতো সিনিয়র নেতারা বৈঠকে যোগ দেন। এছাড়াও সব বিরোধী দলের কোনও না কোনও প্রতিনিধি ছিলেন বৈঠকে।
ওই বৈঠকেই ঠিক হয়েছে, বুধবার সংসদে সম্মিলিতভাবে কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করা হবে। ওই বিল নিয়ে আলোচনাতেও অংশ নেবে ইন্ডিয়া শিবির। প্রথমে বিরোধী শিবিরের তরফে দাবি করা হয়েছিল, ওয়াকফ বিল নিয়ে ১২ ঘণ্টা আলোচনার সময় দেওয়া হোক। কেন্দ্র জানায়, ৬ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত ৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে বিতর্কিত ওই বিল নিয়ে আলোচনার জন্য। বিরোধীদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সম্মিলিতভাবে ওই বিলের বিরোধিতা করা হবে। ভোটাভুটিতে ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে ভোট দেবে বিরোধী দলগুলি।
বিরোধী শিবিরে যখন ওয়াকফ নিয়ে ঐক্যের ছবি, তখন কিছুটা হলেও বিক্ষিপ্ত শাসক শিবির। এনডিএর শরিকরা এখনও বিল নিয়ে দোনামোনায়। চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি বিলটির পক্ষে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও এখনও খানিকটা সংশয়ে বিজেপির বিহারের দুই জোটসঙ্গী জেডিইউ এবং লোকজনশক্তি পার্টি। এখনও যা পরিস্থিতি তাতে এই দুই দল বিলটির পক্ষে ভোট নাও দিতে পারে। সেক্ষেত্রে বিলটি পাশ করানো কঠিন হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর আগস্ট মাসে পেশ হয় ওয়াকফ বিল। এই নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধীদের দাবি মেনে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়েছিল সরকার। প্রাথমিকভাবে ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহেই। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রিপোর্ট দিতে না পারায় কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন পর্যন্ত কমিটিকে সময় দেওয়া হয়। তবে সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ১৪টি সংশোধনী-সহ ওয়াকফ বিলকে সবুজ সংকেত দেয় কমিটি। বুধবার সংসদে বিলটি পেশ হতে পারে।