সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলায় জঙ্গিদের 'বিদ্রোহী' উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এই ঘটনায় বিবিসির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া দিল ভারত সরকার। প্রতিবেদনে 'আপত্তিকর' শব্দ প্রয়োগের জেরে বিবিসির ভারতীয় প্রধান জ্যাকি মার্টিনকে চিঠি লিখেছে কেন্দ্র। চিঠিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, আগামী দিনে ওই সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনের উপর নজর রাখবে কেন্দ্র। প্রয়োজন পড়লে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের ২৬ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। সেনার পোশাকে এসে পর্যটকদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করে বেছে বেছে খুন করা হয়। নারকীয় এই জঙ্গি হামলার ঘটনাকে ‘জঙ্গি হামলা’ না বলে ‘মিলিট্যান্ট অ্যাটাক’ বা ‘বিদ্রোহীদের হামলা’ বলে উল্লেখ করেছিল বিবিসি। ঘটনার জেরে তাদের চিঠি পাঠিয়ে এই শব্দ ব্যবহারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মোদি সরকার। বিদেশমন্ত্রকের তরফে লেখা ওই চিঠিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, এই হামলাকে জঙ্গি হামলা না বলে 'মিলিট্যান্ট' বা 'বিদ্রোহী হামলা' বলে উল্লেখ করে বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। যা অত্যন্ত আপত্তিকর। কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, আগামী দিনে পহেলগাঁও হামলা নিয়ে এই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের উপর নজর রাখবে সরকার। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আগামী দিনে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে এমনও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন শুধরে দেয় হোয়াইট হাউস।
যদিও ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের এহেন পদক্ষেপ এই প্রথমবার নয়, এর আগেই একই ঘটনা ঘটিয়েছিল মার্কিন সংবাদ মাধ্যম 'নিউইয়র্ক টাইম'। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলাকে 'মিলিট্যান্ট অ্যাটাক' বলে উল্লেখ করেছিল তারা। তবে এই বিষয়ে ভারত কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আগেই মার্কিন বিদেশ দপ্তর সতর্ক করে 'নিউইয়র্ক টাইমস'কে। এক্স হ্যান্ডেলে সেই প্রতিবেদনের ছবি এডিট করে, 'মিলিট্যান্ট' (বিদ্রোহী) কেটে লাল কালিতে টেরোরিস্ট (জঙ্গি) লেখা হয়। একইসঙ্গে লেখা হয়, 'নিউইয়র্ক টাইমস' আপনাদের ভুল শুধরে দিলাম। এটা পরিষ্কার জঙ্গি হামলা। এবিষয়ে কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়, সেটা ভারতে হোক বা ইজরায়েলে। যখনই বিষয়টি সন্ত্রাসবাদ হয়ে ওঠে, তখনই বাস্তব সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এই সংবাদমাধ্যম।'
উল্লেখ্য, শুধু বিবিসিকে সতর্কবার্তা নয়, জাতীয় নিরাপত্তার দিকে নজর রেখে ১৬টি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেলকে ভারতে নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। অভিযোগ, ভারতের বিরুদ্ধে লাগাতার মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছিল পাকিস্তানের ইউটিউব চ্যানেলগুলো। ভারতীয় সেনা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কনটেন্ট ছড়ানো হচ্ছিল। বিষয়টি নজরে আসতেই পদক্ষেপ নেয় সরকার। ভারতে যে পাক চ্যানেলগুলি নিষিদ্ধ হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, ডন, সামা টিভি, এআরওয়াই নিউজের মতো চ্যানেলগুলি। পাশাপাশি ইর্শাদ ভাট্টি, আসমা শিরাজি, উমর চিমা এবং মুনিব ফরূক-এর মতো পাক সাংবাদিকদের চ্যানেল নিষিদ্ধ হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিষিদ্ধ করা হয়েছে শোয়েব আখতারের চ্যানেল।
