সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করা হয়েছিল বিলকিস বানোর ধর্ষকদের। এবার গ্রাহাম স্টেইনস ও তাঁর দুই ছেলের হত্যাকারী মহেন্দ্র হেমব্রমকেও দেখা গেল মুক্তির পর মালা পরিহিত অবস্থায়। বুধবার ওড়িশার কেওনঝড় জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। সে ওই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অপরাধী। অন্য অপরাধী দারা সিং অবশ্য এখনও জেলে রয়েছে।
গত শতকের একেবারে শেষে দেশজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল স্টেইনস হত্যাকাণ্ড। ১৯৯৯ সালে ওই অস্ট্রেলিয়ান খ্রিস্টান মিশনারি এবং তার দুই নাবালক ছেলেদের গাড়ির মধ্যে থাকা অবস্থায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। তাঁরা বেরতে চাইলেও হামলাকারীরা লাঠি হাতে তাঁদের বেরতে দেয়নি। ফলে জীবন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৫৮ বছরের গ্রাহাম স্টেইনস ও তাঁর দুই ছেলে ফিলিপ (১০) এবং টিমোথি (৬)-র। এই হামলার নেতৃত্বে ছিল দারা সিং। সব মিলিয়ে ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ৩৭ জন ছাড়া পেয়ে যায় তিন বছরেই।
১৪ জনের নাম ছিল চার্জশিটে। তবে শেষপর্যন্ত এদের মধ্যে ১২ জনই বেকসুর খালাস পায়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় মহেন্দ্র হেমব্রম এবং দারা সিংকে। প্রথমজন অবশেষে মুক্তি পেলেও এখনও জেলে রয়েছে দারা। মুক্তির পর সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে হেমব্রম জানিয়েছে, ''আমি জেলে ২৫ বছর কাটিয়েছি ধর্মান্তর সম্পর্কিত একটি ঘটনায় মিথ্যা জড়িয়ে যাওয়ায়। আজ আমি মুক্তি পেলাম।''
এদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ হেমব্রমের জেলমুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক কেদার দাস বলেছেন, ''এটা আমাদের জন্য ভালো দিন। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।''
এদিকে জেলার মনস্বিনী নায়েক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ''হেমব্রমকে মুক্তি দিয়েছে রাজ্যে শাস্তি পর্যালোচনা বোর্ড। মঙ্গলবারই চিঠিতে আমাদের সেব্যাপারে জানানো হয়। ভালো ব্যবহারের কারণেই ২৫ বছর জেলবাসের পর হেমব্রমকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।'' প্রসঙ্গত, গ্রেপ্তারির সময় মহেন্দ্র হেমব্রমের বয়স ছিল ২৫। এখন পঞ্চাশের প্রৌঢ়। তাকে একটি ব্যাঙ্কের পাসবই দিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ। বন্দি অবস্থায় জেলে সে যা রোজগার করেছে তা অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে গত বছরই ওড়িশায় ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। তারপরই হেমব্রমের মুক্তি। এই দুইয়ের মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহল।