সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) আর বি আর আম্বেদকরকে (B. R. Ambedkar) একাসনে বসিয়ে প্রবল সমালোচিত জাতীয় পুরস্কারজয়ী সংগীত পরিচালক ইল্লাইয়ারাজা (Ilaiyaraaja)। গোটা ভারত যে সুরের জাদুকরকে এক ডাকে চেনে, সেই তিনি বিতর্কে জড়িয়ে ভক্তদের নিশানা হলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভূয়সী প্রশংসার পাশাপাশি তাঁকে সংবিধান প্রণেতা ডা. আম্বেদকরের সঙ্গে তুলনা করায়।
সদ্যপ্রকাশিত একটি বইয়ের মুখবন্ধে ইল্লাইয়ারাজা লিখেছেন, “এই দুই নজরকাড়া ব্যক্তিত্ব উভয়েই নানা প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়ে সফল হয়েছেন, সমাজের ক্ষমতাহীন অংশের মানুষকে যেগুলির মুখোমুখি হতে হয়। দু’জনেই দারিদ্র, প্রতিকূলতা, কঠিন সামাজিক কাঠামোকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। কিন্তু উভয়েই বাস্তববাদী মানুষ। যাঁরা শুধুমাত্র চিন্তাভাবনার স্তরে আটকে থাকেন না, কাজে বিশ্বাস করেন।”
এরপরই আবার তিনি লেখেন, “তিন তালাক নিষিদ্ধ করার মতো নারীমুখী আইন, ঐতিহাসিক ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ আন্দোলনের ফলে লিঙ্গ সমতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সামাজিক রূপান্তর ঘটিয়েছে। এই বিষয়গুলি ডা. আম্বেদকরকেও গর্বিত করত।”
[আরও পড়ুন: রাজকুমার হিরানির ছবিতে সুযোগ পেতে হাত কাটবেন! এ কী মন্তব্য শাহরুখের! দেখুন ভিডিও]
ইল্লাইয়ারাজার এহেন বক্তব্যের মধ্যে রাজনীতির ছায়া দেখছেন গেরুয়া শিবিরের বিরোধীরা। তিনি বিজেপির (BJP) টিকিটে রাজ্যসভা যেতে পারেন, তাই এমন মোদী-ভজনা বলে জল্পনা রয়েছে ওই মহলের। বর্ষীয়ান সংগীত পরিচালকের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে ‘সংঘের’ তকমাও দিচ্ছেন কেউ কেউ। যদিও প্রবাদপ্রতিম সুরকারের ঘনিষ্ঠজনরা সমালোচনা উড়িয়ে বলছেন, যে বাম-উদারপন্থী বুদ্ধিজীবী মহল তাঁকে ‘সংঘের’ বলছে, তাঁরা নিষ্ঠুর আচরণ করছেন। ওনার কোনও রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা নেই।
এ ব্যাপারে একটি সূত্র গঙ্গাই আমারানের উল্লেখ করছে। ২০১৭ সালে বিজেপিতে যোগ দেন এই সংগীতশিল্পী তথা সুরকার। সূত্রটির দাবি, তামিলনাড়ু থেকে যে তিনজনের নাম রাজ্যসভার জন্য ভাবা হচ্ছে, ইল্লাইয়ারাজা তাঁদের অন্যতম। যদিও তাঁকে রাজ্যসভা আসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়ে থাকলেও তাতে তাঁর কোনও দোষ নেই বলে দাবি করেছেন তামিলনাড়ুর প্রথম সারির এক সুরকার। তিনি বলেছেন, “রহমান গ্র্যামি, অস্কার পেলে ইল্লাইয়ারাজাকেও নতুন সম্ভাবনার সন্ধান করার জন্য দোষী বলা যায় না। ওনারও কিছু স্বপ্ন থাকতে পারে। তাঁকে রাজ্যসভা আসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়ে থাকলেও তিনি তা স্বীকৃতি হিসাবেই দেখবেন, রাজনৈতিক সিট হিসাবে নয়। তাই গোটা ঘটনার রাজনৈতিক যোগসূত্র খোঁজা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। দেশের একেবারে সর্বোচ্চ ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে এলে কে-ই বা স্বীকৃতি পেতে অনীহা দেখাবেন কেন?” ইল্লাইয়ারাজার অপরাধ কী? প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির তামিলনাড়ু শাখার সভাপতি কে আন্নামালাইও।