shono
Advertisement
IMA

কন্যাভ্রূণ হত্যা রুখতে আইন বদল চায় IMA, কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু

কন্যাভ্রূণ হত্যা ঠেকাতে দেশে আইন করে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্র।
Published By: Paramita PaulPosted: 07:33 PM Dec 28, 2024Updated: 07:46 PM Dec 28, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৯৪ সাল। কন্যাভ্রূণ হত্যা ঠেকাতে দেশে আইন করে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্র। সরকারি ক্লিনিকে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ বন্ধ হল। বেসরকারি ক্লিনিকে ও শুরু হল ব্যাপক ধরপাকড়। মাঝের সময়ে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান জার্নাল ‘ল্যানসেট’–এর একটি রিপোর্টে স্পষ্ট, এত কিছু করেও তেমন লাভ হয়নি। সেই রিপোর্ট বলছে, ১৯৮৬ থেকে ২০১৬— এই ৩০ বছরে দেশে এবং বিদেশের ১ কোটি ৩৫ লক্ষ কন্যা জন্মের আগেই মারা গিয়েছে ভারতে! মোদ্দা কথা আইন থাকলেও তাকে পাশ কাটিয়ে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ হয়েছে। প্রয়োজনে হত্যা করা হয়েছে! এমন অবস্থায় তাই এই আইনের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রকে নতুন প্রস্তাব দিচ্ছে সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। তাঁদের দাবি, ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ বাধ্যতামূলক করার সুযোগ দিক কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরে নজরদারি করা হোক। এতে প্রতিটি কন্যাভ্রূণকে নজরে রাখা যাবে।

Advertisement

১৯৯৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার পিসি–পিএনডিটি (প্রি-কনসেপশন অ্যান্ড প্রি-ন্যাটাল ডায়গনস্টিক টেকনিকস) আইন প্রণয়ন করে। জিন পরীক্ষা থেকে শুরু করে জরায়ু থেকে সংগৃহীত অ্যামনিয়োটিক ফ্লুইড পরীক্ষা কিংবা আলট্রাসোনোগ্রাফি—এই আইনে যে কোনও পদ্ধতি ব্যবহার করেই ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করা হয়। এর মধ্যে যেহেতু বহুল প্রচলিত আলট্রাসোনোগ্রাফি। তাই প্রবল কড়াকড়ি শুরু হয় রেডিয়োলজি বিশেষজ্ঞদের কাজকর্ম নিয়ে। কিন্তু ২০২১–এর একটি ল্যান্সেট স্টাডির রিপোর্ট থেকে বোঝা যায়, এ সব কড়াকড়ি করে কোনও লাভ হয়নি। এবার তাই এই আইনের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনটির প্রয়োজনীয়তাকে কাঠগড়ায় তুলেছে আইএমএ। সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি আরভি অশোকান বলেন, "তিন দশক হয়ে গেল, তাও তো এই আইনে তেমন কিছুই করা গেল না! এবার রিভিউ করার সময় এসেছে আইনটা নিয়ে।"

কেন পিসি–পিএনডিটি আইনের বর্তমান সংস্থানগুলিতে আপত্তি আইএমএ–র? অশোকান বলেছেন "এতে কন্যাভ্রূণ হত্যা তো বন্ধ হয়নি, উলটে অনর্থক হয়রানি বেড়েছে চিকিৎসকদের। এদিকে আইন প্রবর্তনের পরেও এ দেশে দেখা যাচ্ছে, প্রতি হাজার পুত্রসন্তান পিছু মাত্র ৯২৩ জন কন্যাসন্তান।" তিনি জানান, এই আইনে রেডিয়োলজিস্টরা দুটির বেশি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হতে পারেন না। অথচ এ দেশে রেডিয়োলজিস্টের অভাব রয়েছে। ফলে এই আইন রেডিয়োলজিস্টের পরিষেবা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করছে। আইনের বিধিনিষেধ না থাকলে রেডিয়োলজি বিশেষজ্ঞরা আরও বেশি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থাকতে পারতেন। তাই এ সংক্রান্ত কড়াকড়ি বন্ধের পক্ষে সওয়াল করে আইএমএ প্রস্তাব পাশ করেছে বলে জানান সংগঠনের সভাপতি।

অশোকান বলেন, "আন্তর্জাতিক বাজারে এখন অনেক আধুনিক পোর্টেবল আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন ও তার প্রোব এসে গিয়েছে যা শুধু রেডিয়োলজিস্টরা নন, যে কোনও শাখার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই দ্রুত রোগনির্ণয়ের জন্য সেগুলি ব্যবহার করতে পারেন ক্লিনিকে। কিন্তু সেই মেশিন এ দেশে ব্যবহার করা যাচ্ছে না পিসি-পিএনডিটি আইনের কড়াকড়ির জন্য। আমরা তাই একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছি এই আইনের পুনর্মূ্ল্যায়নের জন্য। অচিরেই চিঠি দিচ্ছি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে। তার আগে আমরা এ নিয়ে আলোচনা করতেও প্রস্তুত সরকারের সঙ্গে।ঠ তিনি জানান, আইএমএ চায়, ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ বন্ধের বদলে সেটিকেই বরং বাধ্যতামূলক করা হোক। তার পর চিহ্নিত কন্যাভ্রূণগুলির উপ নজরদারি থাক সরকারের। তাতে নিশ্চিত ভাবেই কন্যাভ্রূণ হত্যায় রাশ টানা সম্ভব বলে মনে করেন অশোকান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ১৯৯৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার পিসি–পিএনডিটি (প্রি-কনসেপশন অ্যান্ড প্রি-ন্যাটাল ডায়গনস্টিক টেকনিকস) আইন প্রণয়ন করে।
  • জিন পরীক্ষা থেকে শুরু করে জরায়ু থেকে সংগৃহীত অ্যামনিয়োটিক ফ্লুইড পরীক্ষা কিংবা আলট্রাসোনোগ্রাফি—এই আইনে যে কোনও পদ্ধতি ব্যবহার করেই ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করা হয়।
  • ২০২১–এর একটি ল্যান্সেট স্টাডির রিপোর্ট থেকে বোঝা যায়, এ সব কড়াকড়ি করে কোনও লাভ হয়নি।
Advertisement