সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় এক বছর ধরে পূর্ব লাদাখে (Eastern Ladakh) মুখোমুখি ভারত ও চিনের সেনাবাহিনী। গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি সবচেয়ে জটিল হয়ে ওঠে প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন ফিঙ্গার এলাকাগুলিতে। সেখানেই অল্পের জন্য যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পায় পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ। তবে লাগাতার আলোচনার মাধ্যমে গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্যাংগং থেকে ফৌজ সরিয়ে নিয়েছে দুই দেশ। এবার সীমান্তে বিবাদের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু গোগরা থেকে ফৌজ সরাতে রাজি হয়েছে ভারত (India) ও চিন (China)।
[আরও পড়ুন: চিনের সঙ্গে সংঘাতের আবহে Israel পৌঁছলেন ভারতীয় বায়ুসেনা প্রধান ভাদুরিয়া]
সূত্রের খবর, শনিবার দুই দেশের সেনার মধ্যে দ্বাদশ বৈঠকের পরই পূর্ব লাদাখের গোগরা হাইটস থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে রাজি হয় নয়াদিল্লি ও বেজিং। ওই দিন লাদাখের (Ladakh) প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরানো নিয়ে আলোচনা করতে ফের বৈঠকে বসেন ভারত ও চিনের (China) কোর কমান্ডাররা। বৈঠকে ভারতীয় দলের নেতৃত্বে ছিলেন লেহর ১৪ কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। বৈঠকে সীমান্তে সংঘর্ষের বাকি কেন্দ্র-দেপসাং সমতল, গোগরা ও হটস্প্রিং থেকে সেনা সরানো নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, প্যাংগং হ্রদের উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে সেনা সরালেও গোগরা ও হটস্প্রিং থেকে বাহিনী সরাতে নারাজ ছিল বেজিং। কিন্তু এবারের বৈঠকের পর পরিস্থিটি অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ার দিকে এগিয়ে গিয়েছে। বলে রাখা ভাল, কয়েক দফা আলোচনার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে দু’দেশ। ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ তাদের বিপুল সংখ্যক সেনা, শয়ে শয়ে ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া গাড়ি, হাউৎজার সরিয়ে নেয়। প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া আট নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্টের কাছে সরানো হয় চিনের সব ট্যাঙ্ক, হাউৎজার কামান। তবে পরিস্থিতির উপর প্রতি মুহূর্তে কড়া নজর রাখছে ভারতীয় সেনার উপরমহল। সেই মতো পদক্ষেপ ও কৌশল বদলাচ্ছেন তাঁরাও।
প্রসঙ্গত, চিনের সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার সীমান্ত (LAC) ভাগ করে নিয়েছে ভারত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার বেশ কিছু জায়গায় ভারতের জমি দখল করে রেখেছে চিনা বাহিনী। কিন্তু সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন এলকাতেই সীমিত ছিল। তারপর লাদাখের দেপসাং সমতল, গোগরা-হটস্প্রিং নিয়েও আলোচনা শুরু হয়। এবার গোগোর থেকে সেনা প্রত্যাহার ভারতের কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। তবে সংঘাতের কেন্দ্র থেকে পিছিয়ে গেলেও লাদাখে এখনও ভারতীয় ভূখণ্ডের অনেকটাই চিনা ফৌজের দখলে রয়েছে।