সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভিক্ষার ঝুলি হাতে বিশ্বে ঘুরতে থাকা পাকিস্তানের কোমর ভাঙার প্রস্তুতি ভারতের। চাবাহার বন্দরকে অস্ত্র করে এবার পাক অর্থনীতির দফারফা করার কৌশল নিল মোদি সরকার। ভারত বন্ধু আফগানিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলির করাচি বন্দর নির্ভরতা কমাতে তৎপর হল নয়া দিল্লি। 'ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর' (INSTC)-এর মাধ্যমে চাবাহার বন্দরের গুরুত্ব বাড়াতে এবং করাচিকে বোতলবন্দি করতে জুনে ভারত সফরে আসছেন মধ্য এশিয়ার ৫ দেশের বিদেশমন্ত্রী। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠক করবেন তাঁরা।
পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের জেরে দীর্ঘ সময় ধরে সন্ত্রাসের শিকার মধ্য এশিয়া। আফগানিস্তানেও সীমান্তবর্তী সন্ত্রাস গুরুতর আকার নিয়েছে। যার জেরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছে তালিবান সরকার। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে এড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চাবাহারের গুরুত্ব বাড়াতে চায় ভারত। সেই লক্ষ্যেই জুন মাসে দিল্লি আসছেন কাজাকিস্তান, কিরঘিজ রিপাবলিক, তাজাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীরা। এই দেশগুলিতে কোনও সমুদ্র বন্দর না থাকায় এতদিন পাকিস্তানের করাচি বা গদর হয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য করতে হত দেশগুলিকে। তবে চাবাহার বন্দর নির্মাণের পর এদের মধ্যে কাজাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান 'আইএনএসটিসি' রুটে আফগানিস্তান হয়ে বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছে। পাকিস্তানকে এড়াতে এবার বাকি দেশগুলির সঙ্গে হাত মেলাতে চায় ভারত।
জানা যাচ্ছে, ২০২২ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লিতে এই ৫ দেশের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে কোনও কারণে তখন সেই বৈঠক সম্ভব হয়নি। এবার ইউরেশিয়ার 'আইএনএসটিসি' রুটের গুরুত্ব বাড়াতে তৎপরতা শুরু করল ভারত সরকার। যার মাধ্যমে পাকিস্তানকে এড়িয়ে ভারত-সহ অন্যান্য দেশে সহজে বাণিজ্য করতে পারবে দেশগুলি। জানা যাচ্ছে, এই বৈঠকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব ও 'আইএনএসটিসি'-এর মাধ্যমে বাণিজ্যের উপর জোর দেওয়া হবে। পাশাপাশি এই বৈঠকে ভারত মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির লক্ষ্যে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বাড়তে থাকা সন্ত্রাসবাদ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন রুশ-সহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলি। ভারত চায় এই পরিস্থিতির ফায়দা নিতে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই দেশগুলি যদি একজোট হয়ে পাকিস্তানকে বয়কট করে সেক্ষেত্রে বিরাট ধাক্কা খাবে পাক অর্থনীতি। গত কয়েকমাসে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে কাজাকিস্তান, কিরঘিজ রিপাবলিক ও তাজাকিস্তান। ২০২৪ সালে এসসিও বৈঠকেও এই দেশগুলি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের পক্ষে সুর তুলেছিল।
