সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রদ্ধা ওয়ালকারকে খুনের পর দেহ ৩৫ টুকরো করেছিল লিভ ইন পার্টনার আফতাব পুনাওয়ালা। দেহাংশ ফেলে এসেছিল জঙ্গলে। সেই নৃশংস ঘটনায় শিউড়ে উঠেছিল দেশ। এবার দিল্লির শ্রদ্ধাকাণ্ডের ছায়া ঝাড়খণ্ডে! লিভ ইন সঙ্গীকে খুন করে দেহ অন্তত ৪০ টুকরো করার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, জঙ্গলে ছড়ানো সেই দেহাংশই তুলে এনে খুবলে খেল পথকুকুর। ভয়ংকর এই দৃশ্য দেখে হাড়হিম হয়ে যায় ঝাড়খণ্ডের কুন্তি জেলার গ্রামবাসীদের। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম নরেশ বেঙরা। কুন্তি জেলার বাসিন্দা সে। তামিলনাড়ুতে একটি মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করত নরেশ। গত দুবছর ধরে তামিলনাড়ুতেই তার সঙ্গে লিভ ইনে থাকত মৃত তরুণী। কিন্তু সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে ফিরে আসে নরেশ। পরিবারের পছন্দ করা পাত্রীকে বিয়েও করে নেয়। লিভ ইন সম্পর্কের কথা স্ত্রী ও পরিবারের কাছে গোপন রেখেছিল নরেশ। ওই তরুণীকেও বিয়ের কথা জানায়নি নরেশ। বিয়ের কয়েকদিন পর ফের তামিলনাড়ুতে ফিরে যায় নরেশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ফিরে যাওয়ার পর নরেশকে বিয়ের জন্য চাপ দেন লিভ ইনে থাকা তরুণী। গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। যা নিয়ে দুজনের মধ্যে গোলও বাধে। গত ৮ নভেম্বর লিভ ইন সঙ্গীকে ঝাড়খণ্ডে নিয়ে যায় নরেশ। কিন্তু বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে তরুণীকে একটি জঙ্গলে নিয়ে যায় সে। অভিযোগ, জঙ্গলেই প্রথমে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নরেশ। তার পর দেহটির ৪০ থেকে ৫০ টুকরো করে। দেহাংশ লোপাটের জন্য জঙ্গলের চারপাশে ছড়িয়ে দেয়। যাতে জঙ্গলের পশুরা দেহাংশগুলো খেয়ে ফেলে। তাহলে খুনের কোনও প্রমাণ থাকবে না। পরিকল্পনা করে সব কিছু করে গ্রামে ফিরে আসে নরেশ। ওই জঙ্গলের পাশেই তার গ্রাম জোরদাগ। এর পর দিন চারেক আগেই গ্রামবাসীরা দেখেন এক পথকুকুর একটি কাটা হাত খুবলে খাচ্ছে। হইচই পড়ে যায় গ্রামে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা স্থানীয় থানায় খবর দেন।
পুলিশ এসে কাটা হাতটি উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করে। পাশের জঙ্গলে গিয়ে তল্লাশির পর দেহাংশগুলো উদ্ধার হয়। ওখানেই একটি ব্যাগ পায় পুলিশ। সেখানে ওই তরুণীর সমস্ত জিনিস ছিল। মেলে আধার কার্ডও। সেই দেখেই মৃতের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। ওই তরুণীর মাকে খবর দেওয়া হয়। তিনি দেহাংশগুলো শনাক্ত করে নরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সূত্র ধরেই গ্রামে গিয়ে নরেশের খোঁজ পায় পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জেরায় সমস্ত কিছু স্বীকার করেছে সে। বুধবার এনিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করায় দেহ টুকরো করতে অসুবিধা হয়নি নরেশের। ঘটনার দিন তরুণীকে রাস্তায় অপেক্ষা করতে বলে বাড়ি থেকে মাংস কাটার ছুরি নিয়ে এসেছিল সে। এই নৃশংস ঘটনাই ফের একবার মনে করিয়ে দিল ২০২২ সালের দিল্লির শ্রদ্ধাকাণ্ড।