সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাজপেয়ীর পথেই হাঁটলেন ইয়েদুরাপ্পা। ১৯৯৬-এ ১৩ দিন প্রধানমন্ত্রী থাকার পর আস্থা ভোটে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পদত্যাগ করেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। একই পথে হেঁটে আস্থা ভোটের আগেই পদত্যাগ করলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আজ বিকেল চারটের সময় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার কথা ছিল ইয়েদির। বিরোধীদের অভিযোগ অনুযায়ী বিধায়ক কেনাবেচার বিস্তর চেষ্টাও করেছিল বিজেপি। আর এই আস্থা ভোট নিয়ে দিনভর চূড়ান্ত নাটকও চলল বেঙ্গালুরুতে। কিন্তু এসবের শেষে সবাইকে চমকে দিলেন ইয়েদি নিজেই। আস্থা ভোটের আগেই সরে দাঁড়ালেন কুর্সি থেকে।
আস্থা ভোটের বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল ইয়েদির পদত্যাগ নিয়ে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি দাবি করছিল আস্থাভোটে জয় সম্ভব নয় বুঝতে পেরেই এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন তিনি। বিধানসভায় বক্তব্য রাখার আগে দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গেও কথা বলেন ইয়েদি, ততক্ষণে চিত্রনাট্য মোটামুটি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। জয়ের স্বাদ পেয়ে একের পর এক বিধানসৌধে আসতে শুরু করেছিলেন কংগ্রেস নেতারাও।
এরপরই স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেন ইয়েদি। ২০ মিনিটের আবেগঘন বক্তব্যের শেষে ঘোষণা করেন পদত্যাগ করার কথা। তবে, পদত্যাগ করলেও আগামিদিনে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করেছেন, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে কর্ণাটকের সবকটি আসন জিতবে বিজেপি। সেই সঙ্গে পরবর্তীকালে দেড়শোর বেশি আসনে জিতে কর্ণাটকের মসনদ দখল করবেন তিনি। অনেকে মনে করছিলেন বিদায়ী ভাষণে লিঙ্গায়েত কার্ড খেলে শেষ চেষ্টা করে দেখতে পারেন তিনি কারণ বিরোধী শিবিরে ছিলেন অন্তত ১২ জন লিঙ্গায়েত বিধায়ক। কিন্তু সেপথে না হেটে সরে দাঁড়ানোকেই শ্রেয় মনে করলেন ইয়েদুরাপ্পা। বিদায়ী ভাষণে একবারও উচ্চারণ করেননি লিঙ্গায়েত শব্দটি, বরং তাঁর ভাষণের সিংহভাগ জুড়ে রইল কর্ণাটকের কৃষক এবং সাধারণ মানুষের কথা।
এদিকে ইয়েদ্দি পদত্যাগ করার পরই উচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে বিরোধী শিবিরে। সরকার গড়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস-জেডি (এস) জোট। শুধু কংগ্রেস, জেডি (এস) নয় উচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে অন্য বিরোধীদের মধ্যেও। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস জনতা দলকে টুইটে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। এই জয়কে ‘আঞ্চলিক’ ফ্রন্টের জয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।
কংগ্রেসও এই জয়কে গণতন্ত্রের জয় হিসেবে বর্ণনা করেছে। আপাতত সরকার গড়ার জন্য রাজ্যপালের ডাকের অপেক্ষায় কুমারস্বামী।