নন্দিতা রায় ও সোমনাথ রায়: বাবাসাহেব আম্বেদকরকে জড়িয়ে অমিত শাহের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে বিঁধে বলছেন, "ওদের মুখোশ খুলে গেল। ২৪০ আসন পেয়েই এভাবে আম্বেদকরকে অসম্মান করছে। ৪০০ আসন পেলে হয়তো বাবাসাহেবের সব অবদান ভুলে নতুন ইতিহাস লিখত।"
এক দেশ এক ভোট নিয়ে ভাষণ দিতে গিয়ে মঙ্গলবার অমিত শাহ সংসদে একটি বেফাঁস মন্তব্য করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার সংসদে বলেন, “এখন এক ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে- আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর। এতবার যদি ভগবানের নাম নিত তবে সাতজন্ম সার্থক হয়ে যেত।” শাহ বলেন, “১০০ বার ওর (বিআর আম্বেদকর) নাম নিন, কিন্তু ওঁকে নিয়ে আপনাদের কী আবেগ ছিল? তফসিলি জাতি বা তফসিলি উপজাতিদের প্রতি সরকারের আচরণ নিয়ে খুশি ছিলেন না আম্বেদকর।” শাহের ‘ফ্যাশন’ মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের দাবি, শাহ যেভাবে ওই কথাগুলি বলেছেন, তাতে আম্বেদকরের চূড়ান্ত অবমাননা করা হয়েছে।
খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশাল মিডিয়ায় বলছেন, 'সংসদে যখন সংবিধানের ৭৫ বছর উদযাপন হচ্ছে তখন অমিত শাহ অপমানকজনক মন্তব্য করে আম্বেদকরের ভাবমূর্তি নষ্টের পথ বেছে নিলেন। সেটাও গণতন্ত্রের মন্দির সংসদে দাঁড়িয়ে।' বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, 'এতেই ওদের বর্ণবিদ্বেষী, দলিত বিরোধী মানসিকতা স্পষ্ট বোঝা যায়। ২৪০ আসন পাওয়ার পরই ওরা এমন আচরণ করছে, ৪০০ আসনের স্বপ্ন সত্যি হয়ে গেলে হয়তো আম্বেদকরের সব অবদান ভুলে নতুন ইতিহাস লিখে দিত।' মমতা বলছেন, 'অমিত শাহর এই মন্তব্য সেই লক্ষ লক্ষ মানুষকে আঘাত করছে যারা আম্বেদকরের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন, তাঁর দেখানো পথে চলেন। কিন্তু যে দলটা বিভেদ এবং ঘৃণায় বিশ্বাস করে, সেই দলের থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশাও করা যায় না।"
এদিন সকাল থেকেই সংসদে আম্বেদকর নিয়ে শাহী মন্তব্যের রেশ দেখা গিয়েছে। সংসদের ভিতর ও বাইরে বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তৃণমূল সাংসদরাও শাহের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে ওয়াকআউট করেছেন। সূত্রের খবর, শাহের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিতে চলেছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন।