সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাতিদাঙ্গায় অগ্নিগর্ভ মণিপুর। পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি। ঘটনাপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে আনতে পাহাড়ি রাজ্যটিতে স্বশস্ত্র সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অসম রাইফেলস। এহেন পরিস্থিতিতে মণিপুরে সেনার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের একটি খবর ঘিরে জোর জল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই বিষয়ে সেনাবাহিনী সাফ জানিয়েছে, এসবই গুজব। কেউ বা কারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মিথ্যা খবর রটাচ্ছে।
কুকি-মেতেই সংঘর্ষে মণিপুর এখন অশান্ত, হিংস্র। সেখানকার ‘মেতেই’ সংখ্যাগরিষ্ঠ উপজাতির তফসিলি জাতির স্বীকৃতির দাবি নিয়ে আন্দোলন ওই ছোট্ট রাজ্যে নাগা-কুকি জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে পালটা প্রত্যাঘাতের জন্ম দিয়েছে। অতএব, রক্তাক্ত লড়াই। কারফিউ। পুলিশের গুলি। দিল্লির যন্তরমন্তরে মেতেই হিন্দু-বৈষ্ণব গোষ্ঠীর নজরকাড়া আন্দোলন, নাগা-কুকিদের বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের শ্রীবৃদ্ধি। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ঘোরাল। তাছাড়া, মায়ানমার থেকে কুকি জঙ্গিরা এসে আগুনে ঘি ঢালছে। বিগত দিনে, মণিপুর থেকে একটি ছোটখাটো যুদ্ধ চালনা করার মতো অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনা। এহেন পরিস্থিতিতে, মণিপুরে সেনার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের একটি খবর ঘিরে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই বিষয়ে সেনাবাহিনীর স্পিয়ার কোর সাফ জানিয়েছে, এসবই গুজব। কেউ বা কারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মিথ্যা খবর রটাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনায় ‘শোকস্তব্ধ’ রাজা চার্লস, ভারতের পাশে ব্রিটেন]
নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে সেনার স্পিয়ার কোর লিখেছে, ‘এই মুহূর্তে মণিপুরে ফ্যাক্ট-চেকিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সঠিক খবর পেতে এখানে নজর রাখুন।’
উল্লেখ্য, মণিপুরে ট্রাইবাল বা আদিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই নতুন কিছু নয়। কয়েকশো বছর ধরে তা চলছে। তবে এবার তা ভিন্ন মাত্রা ধারণ করেছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেতেইরা তফসিলি উপজাতির তকমা দাবি করে বারুদের স্তূপে আগুন দিয়েছে।গত এপ্রিল মাসে রাজ্য সরকারকে মেতেইদের দাবি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তারপর ৩ মে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ শুরু করে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’। মেতেইদের তফসিলি উপজাতির তকমা না দেওয়ার দাবিতেই ছিল এই মিছিল। ক্রমেই তা হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। মেতেই সংখ্যাগুরু ইম্ফল উপত্যকায় বেশকিছু বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর এর প্রতিক্রিয়াও হয় প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা।