সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নানা পদে দায়িত্বের সুবাদে বরাবরই দিল্লির বাসিন্দা হলেও অসমের সঙ্গে ছিল মনমোহন সিংয়ের বিশেষ যোগ। আর সেই রাজ্য থেকেই রাজ্যসভার সাংসদ থেকেছেন একটানা ২৮ বছর। ওই অসমেই একটি দু'কামরার ভাড়াবাড়ি ছিল তাঁর বাসস্থান। অন্তত সেটাই ছিল তাঁর সরকারি ঠিকানা।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিতেশ্বর শইকিয়ার বাড়ির এলাকার মধ্যে দুই কামরার একটি অ্যাপার্টমেন্ট বরাদ্দ ছিল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতার জন্য। আসলে নরসিমা রাও সরকারের মন্ত্রিসভায় যখন অর্থমন্ত্রী হিসাবে মনমোহন সিংকে বেছে নেওয়া হয় তখন সবচেয়ে সহজ ছিল রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকা মানুষটিকে নিরাপদ কোনও রাজ্য থেকে সরাসরি রাজ্যসভায় সাংসদ করে আনা। সেই মতোই পদক্ষেপ করে কংগ্রেস। কংগ্রেসশাসিত রাজ্য অসমের নিশ্চিত আসন থেকে মনমোহনকে মনোনয়ন দেওয়া ছিল সব চেয়ে নিরাপদ পদক্ষেপ। সেই কারণেই ওই রাজ্যে একটি বাসস্থান প্রয়োজন মনোনীত প্রার্থীর।
ফলে গুয়াহাটির নন্দননগরে ৩৯৮৯ নম্বর বাড়িটি ঠিকানা হয়ে ওঠে মনমোহনের কাগজে-কলমে বাসস্থান। পরে দিল্লি থেকে অসমে তাঁদের ভোটার হিসাবে নামও সরিয়ে নেন মনমোহন ও তাঁর স্ত্রী গুরশরণ। ২০১৯ সালে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় যাওয়ার আগে পর্যন্ত সেটাই ছিল 'অসমের সাংসদের' ঠিকানা। ভোট দিতে দিসপুরে যেতেনও তাঁরা। চলতি বছরের শুরুতে বয়সের কারণে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার সময় শেষ পাঁচ বছর অবশ্য রাজস্থানের সাংসদ ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
হিতেশ্বর শইকিয়ার স্ত্রী হেমপ্রভা শইকিয়া জানিয়েছেন, তিনিই ছিলেন বাড়ির মালকিন। তাই মনমোহন সিং তাঁরই ভাড়াটে ছিলেন। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রাজ্যসভায় ভোটের মনোনয়ন পেতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে নিজস্ব বাড়ি না থাকলেও চলে। অনেক অবশ্য মামলাও ঠুকে দেন মনমোহনের রাজ্যসভার মনোনয়ন নিয়ে। তবে তা ধোপে টেকেনি। তাই সাতশো টাকা ভাড়া দিয়ে ১৯৯১ সালে ওই বাড়ির ভাড়াটে ছিলেন দেশে উদার অর্থনীতির আমদানিকারী। মনমোহন ওই বাড়ি ছেড়ে রাজস্থানে চলে যাওয়ার পরেও অন্য কোনও ভাড়াটেকে আর বাড়িটি ভাড়া দেননি শইকিয়া দম্পতি।