সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যৌন হেনস্তার বিচার চেয়ে গায়ে আগুন দিয়ে ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল বিজেপি শাসিত ওড়িশা। এর মধ্যেই এবার পুরির রাস্তায় ১৫ বছরের কিশোরীকে গায়ে আগুন লাগিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা! অগ্নিদগ্ধ কিশোরীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভুবনেশ্বর এইমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় নতুন করে বিজেপি শাসিত রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব বিরোধীরা। এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, কোথায় গেল 'বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও স্লোগান?'
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটেছে পুরী জেলার বায়াবার গ্রামে। কিশোরী তার বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছিল, সেই সময় তিন দুষ্কৃতী তার পথ আটকায়। এবং কিশোরীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এরপর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কতীরা। কিশোরীর আর্তনাদ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তারাই আগুন নিভিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। এই বিষয়ে পুরীর জেলাশাসক চঞ্চল রান জানিয়েছেন, বালান্দা থানার নিমপদা ব্লকে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে। ১৬ বছরের এক কিশোরীর গায়ে আগুন লাগানো হয়েছে। সে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হয়েছে। আমরা এইমস হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি যাতে করে ঠিক মতো চিকিৎসা হয়।
বিজেপির মন্ত্রী একথা বললেও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে সরব বিরোধীরা। পুরীর ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল কংগ্রেস পোস্ট করেছে, "এখন বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও স্লোগান কোথায় গেল? মহিলা কমিশন লুকোচ্ছে? নাকি তারা ভারতের কন্যাদের রক্ষা করার বদলে বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দিতে ব্যস্ত?" প্রধানমন্ত্রী মোদিকেও খোঁচা দিয়েছে দলটি। লেখা হয়েছে, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আপনার হাতে রক্ত লেগে রয়েছে!"
আগের ঘটনায় ওড়িশায় অধ্যাপকের যৌন হেনস্তার বিচার চেয়ে ভরা ক্যাম্পাসে গায়ে আগুন দিয়েছিলেন ছাত্রী। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের বহু চেষ্টা সত্ত্বেও সোমবার রাতে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর। ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত অধ্যাপককে। কিন্তু ওই ছাত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়েই প্রতিবাদে নেমেছে একাধিক বিরোধী দল। ভুবনেশ্বর এইমসে চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই ছাত্রী। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন। গোটা ঘটনাটিকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক হত্যা’ বলে তোপ দেগেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।
ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ব্যথিত ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কও। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘সবচেয়ে যন্ত্রণার বিষয় হল, এই মৃত্যু কেবল দুর্ঘটনা নয়। যে সিস্টেমের উচিত ছিল তাঁকে সাহায্য করা, সেই সিস্টেমই চুপ করে থেকে তাঁকে হত্যা করেছে।’ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী সূর্যবংশী সূরজের পদত্যাগ, গোটা ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের মতো একাধিক দাবিতে বৃহস্পতিবার বন্ধের ডাক দেয় সিপিএম, বিজেডি, কংগ্রেস-সহ আটটি দল।
