সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌটালা। শুক্রবার গুরুগ্রামে নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দলের (আইএনএলডি) নেতা তথা হরিয়ানার জাঠ রাজনীতিকে জাতীয় স্তরে তুলে আনার অন্যতম মহীরুহ ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চৌটালা। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
১৯৩৫ সালের জানুয়ারি মাসে জন্ম ওমপ্রকাশের। পুরোপুরি রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা ওমপ্রকাশের বাবা ছিলেন দেশের প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী চৌধুরী দেবীলাল। তাঁর হাত ধরেই হরিয়ানার জাঠ সম্প্রদায় রাজনীতির নয়া মাত্রা পায়। পিতার মৃত্যুর পর এই জাঠ রাজনীতি জাতীয় রাজনীতির আঙিনায় তুলে আনেন দেবীলালের সুযোগ্যপুত্র ওমপ্রকাশ। হরিয়ানার জাঠ রাজনীতির এহেন মহারথীর প্রয়াণে যে শূন্যস্থান তৈরি হল তা ভরাট করা কঠিন বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন, 'হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌটালার প্রয়াণে আমি শোকস্তব্ধ। চৌধুরী দেবীলালের যোগ্য পুত্র তাঁর পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে রাজ্য রাজনীতিতে দীর্ঘ বছর সক্রিয় ছিলেন। তাঁর প্রয়াণের তাঁর শোকাতুর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।'
হরিয়ানা রাজনীতিতে ওমপ্রকাশের উত্থানও ছিল নজরকাড়া। আইএনএলডি দলের ৭ বারের বিধায়ক তথা হরিয়ানার ৫ বারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। দক্ষ রাজনীতিবিদ ওমপ্রকাশের দল আইএনএলডি, একটা সময় ছিল এনডিএর সহযোগী ছিল। পরে তৃতীয় ফ্রন্টে যোগ দেন। ২০০৯ সালে এনডিএ ও ইউপিএতে যোগ সব জোট ত্যাগ করেন। ১৯৮৭ সালে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে মনোনীত হন ওমপ্রকাশ। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন তিনি। তবে বিতর্কও পিছু ছাড়েনি তাঁর। ২০০৮ সালে জুনিয়র বেসিক শিক্ষক পদে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ৩,২১৬ জনকে নিয়োগ করার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন ওমপ্রকাশ। সিবিআই তদন্তের পর ২০১৩ সালে দিল্লি আদালত ওমপ্রকাশ ও তাঁর পুত্র অজয় সিং চৌটালাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। শীর্ষ আদালতেও বহাল থাকে এই শাস্তি।
তবে তিহাড় জেলে বন্দি থাকাকালীন ২০১৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসেন ওমপ্রকাশ। সেই পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণও হন। পরে অবশ্য তাঁর বয়স ও স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার কারণে শাস্তির মেয়াদ শেষের আগেই মুক্তি দেওয়া হয় তাঁকে।