সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেমিক সাহিল শুক্লার সঙ্গে মিলে নিজের স্বামী সৌরভকে কেটে ১৫ টুকরো করে ড্রামে লুকিয়ে রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মুসকান রাস্তোগি। এখন দুজনেরই ঠাঁই হয়েছে মিরাটের জেলা কারাগারে। তাঁদের নৃশংসতা নিয়ে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, তখন জেলেও সাহিলের সঙ্গে একই কুঠুরিতে থাকতে চেয়ে আবেদন করলেন মুসকান। যদিও সেই আর্জি নাকচ করে দিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ।

তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, মুসাকন রস্তোগী এবং সাহিল শুক্লার বন্ধুত্বের শুরু স্কুলবেলায়। যদিও মাঝে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ হয় উভয়ের। এবং ঘনিষ্ঠতা ও মেলামেশে। শেষ পর্যন্ত 'ভালোবাসার টানে' পথের কাঁটা মুসকানের স্বামী সৌরভ রাজপুতকে হত্যা করেন দুজনে মিলে! বর্তমানে মেরঠের চৌধুরী চরণ সিং জেলা সংশোধনাগারে ঠাঁই হয়েছে তাঁদের। সেখানে সাহিলের সঙ্গে একই কুঠুরিতে থাকার আর্জি জানিয়েছিলেন মুসকান। যদিও জেলের নিয়ম মেনে খারিজ হয়েছে সেই আবেদন। জেল সুপার বীরেশরাজ শর্মা জানিয়েছেন, একই কুঠুরিতে পুরুষ এবং মহিলা বন্দি থাকতে পারেন না।
আগেই জানা গিয়েছিল, একই জেলের দুটি আলাদা ওয়ার্ডে রয়েছেন সাহিল ও মুসকান। মাঝে দেড় কিলোমিটারের দূরত্ব। জেলে প্রথম রাতে দু’জনেই নাকি নেশাদ্রব্যের অভাবে ছটফট করছেন। মুসকানের দাবি ইনজেকশন, সাহিল চাইছেন মারিজুয়ানা! দুই অভিযুক্তই ‘উইথড্রয়াল সিনড্রোমে’ ভুগছেন বলে দাবি জেল কর্তৃপক্ষের। তাঁদের চিকিৎসকের নজরদারি রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থার যেন অবনতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছে। দু’জনের কারও পরিবারের সদস্যরাই জেলে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি বলেও জানানো হয়।
জানা যাচ্ছে, মুসকান খাবার খুবই অল্প খেয়েছেন। তাঁকে সেলের ভিতরে এককোণে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। বারবার দাবি করছেন, তাঁকে ইনজেকশন দেওয়া হোক। নেশামুক্তির ওষুধ তাঁদের দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে দিন দশেক তাঁদের এই ‘উইথড্রয়াল সিনড্রোম’ দেখা যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। চিকিৎসকদের ধারণা, ২০১৯ সাল থেকেই দু’জনে নেশা করছেন। তাই নেশা এমন প্রবল আকার ধারণ করেছে। সাহিলও ছটফট করেছেন সারা রাত।এদিকে সাহিলের ঘর তল্লাশি করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। জানা যাচ্ছে, সেখানে নাকি তন্ত্রসাধনা কিংবা শয়তান উপাসনার নানা চিহ্ন দেখা গিয়েছে। তিনি গোপনে কালো জাদুর চর্চা করতেন বলেই অনুমান।
প্রসঙ্গত, ৪ মার্চ ২৯ বছরের সৌরভ রাজপুতকে খুন করেন স্ত্রী ২৭ বছরের মুসকান রাস্তোগি। তাঁর সঙ্গী ছিলেন সমবয়সি সাহিল। দাবি, সৌরভকে খুন করার পর হিমাচল রওনা হন দু’জনে। প্রথমে তাঁরা আসেন মানালি। তারপর সেখান থেকে চলে যান কাসল। গত ১০ মার্চ সেখানকার হোটেল পূর্ণিমায় চেক ইন করেন। থাকেন ১৬ মার্চ পর্যন্ত। এই সময়কালে একসঙ্গে তাঁরা হোলি পার্টি করেছেন। তুষারপাত উপভোগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে কোনওরকম টেনশনের চিহ্নও ছিল না বলেই দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।