সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সারা দেশে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের ২২,২৮০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ব্যাঙ্কের কাছে ফেরানো হয়েছে। লোকসভায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এমনটাই জানালেন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দাবি, আমজনতার টাকা লুট করে যে শিল্পপতিরা বিদেশে চম্পট দিয়েছেন, তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীদের হারানো সম্পদের একটা অংশ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট।
সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের তালিকায় রয়েছেন বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি, মেহুল চোকসি। রোজ ভ্যালি, ভূষণ পাওয়ার অ্যান্ড স্টিলের মতো সংস্থাও। বেআইনি সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন লিকার ব্যারন বিজয় মালিয়া। তাঁর ১৪,১৩১.৬ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ফেরানো হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে পলাতক হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদি। তাঁর ১,০৫২.৫৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা সরাসরি ভুক্তভোগীদের এবং বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেহুল চোক্সির ২,৫৬৫.৯০ কোটি টাকার বেআইনি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ভূষণ পাওয়ার অ্যান্ড স্টিলের ৪০২৫ কোটি, রোজ ভ্যালির ১৯.৪ কোটি, ন্যাশনাল স্পট এক্সচেঞ্জের ১৭.৪৭ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করে ব্যাঙ্কে ফিরিয়েছে ইডি।
আর্থিক অপরাধে অভিযুক্তদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে বারবার মোদি সরকারকে নিশানা করছে বিরোধী শিবির। এই অবস্থায় কেবল বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির তালিকায় দেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। বিরোধীদের উদ্দেশে তাঁর জবাব, সরকার কোনও ছাড় দেয়নি। বরং অভিযুক্তদের ধাওয়া করা হয়েছে। এইসঙ্গে নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে ব্যাঙ্কের টাকা ব্যাঙ্কেই ফেরে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই ইডির তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সূরজেওয়ালা। সংসদে তিনি জানান, ২০১৯ থেক ২০২৩-এর মধ্যে ৯০০টি আর্থিক তছরুপের মামলার তদন্ত করেছে ইডি। এর মধ্যে মাত্র ৪২টি মামলায় (৪.৬ শতাংশ) সাফল্য পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট, দোষী সাব্যস্ত হয়েছে অভিযুক্ত। কংগ্রেস নেতার দাবি, এর থেকেই প্রমাণিত বিজেপি কীভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ইডিকে ব্যবহার করছে। যদিও কার্যক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর আগে গত আগস্টে ইডির তদন্তে সাফল্যের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল খোদ সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার নির্মলা সংসদে এই অভিযোগের জবাব দিতে কার্যত বাধ্য হয়েছেন।