সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯২৫-এর ২৭ সেপ্টেম্বর যে চারাগাছটি পুঁতেছিলেন কেবি হেডগেওয়ার। আজ তা 'মহীরুহে' পরিণত। বিজেপির রিমোট রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের হাতে। এবার প্রতিষ্ঠানের জন্ম শতবর্ষে হিন্দু সমাজকে একত্রিত করতে দেশে এক লক্ষ হিন্দু সম্মেলনের লক্ষ্যমাত্র নিল আরএসএস। দেশজুড়ে ৫৮ হাজার ৯৬৪ মণ্ডল এবং ৪৪ হাজার ৫৫টি বস্তিতে অনুষ্ঠিত হবে হিন্দু সম্মেলন। পাশাপাশি ভাষা বিতর্কে অস্বস্তিতে পড়া বিজেপিকে উদ্ধার করতেও মাঠে নামছে সংঘ নেতৃত্ব।
শতবর্ষ উদযাপনে রূপরেখা স্থির করতে সংগঠনের প্রান্ত প্রচারকদের নিয়ে গত শুক্রবার থেকে রবিবার (৪-৬ জুলাই) পর্যন্ত দিল্লিতে বৈঠক করে আরএসএস। বৈঠক সংঘের মুখপাত্র সুনীল আম্বেকর জানান, শতবর্ষে গ্রামীণ অঞ্চলে মণ্ডল স্তরে এবং শহরাঞ্চলে বস্তি স্তরে হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যাতে করে সমাজের সকল স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারেন। বর্তমানে দেশে ৫৮ হাজার ৯৬৪টি মণ্ডল ও ৪৪ হাজার ৫৫টি বস্তি রয়েছে। এই সম্মেলনগুলিতে সামাজিক উৎসব, সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতি নিয়ে আলোচনা হবে। সম্মেলনের লক্ষ্য হল, হিন্দু সমাজের বিভাজন দূর করা। পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সঙ্খের মতাদর্শ প্রচার, সংঘ সাহিত্য বিতরণ করবেন দলীয় কর্মীরা।
শতবর্ষে এক ঢিলে দুই পাখি মরাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। একদিকে যেমন ধুমধাম করে সংগঠনের সাফল্য উদযাপন করা হবে, পাশাপাশি গত কয়েক বছরে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কের জখম মেরামত করা হবে। আরএসএস মনে করে, বিজেপির হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে ভাষাভিত্তিক, রাজ্যভিত্তিক ও জাতভিত্তিক বিভাজন ঘটাতে তৎপর হয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। অনেকাংশে তারা সফলও হয়েছে। গত লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে হিন্দুদের একটি বড় অংশ বিজেপির বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। সেই ছবি বদলাতে সামগ্রিক ভাবে হিন্দু সমাজকে এক ছাতার তলায় আনতে হিন্দু সম্মেলনের সিদ্ধান্ত।
এছাড়াও হিন্দির আগ্রাসন তথা ভাষা বিতর্কের হাওয়া ঘোরাতে তৎপর সংঘ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভাষা সংক্রান্ত বিতর্কে প্রতিটি আঞ্চলিক ভাষাকে রাষ্ট্রীর ভাষা হিসেবে ব্যাখ্যা করে প্রাথমিক স্তরে আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার উপরে জোর দিচ্ছে তারা। এই বিষয়ে মুখপাত্র আম্বেকর বলেন, "আরএসএস মনে করে ভারতের প্রতিটি ভাষাই হল জাতীয় ভাষা।" বিশ্লেষকরা অবশ্য জানাচ্ছেন, ভাষা নিয়ে বিজেপি ও আরএসএসের ভাবনায় পার্থক্য রয়েছে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যেখানে ত্রিভাষা শিক্ষানীতির মাধ্যমে দেশে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষে, সেখানে আরএসএস আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষাদানে জোর দিতে চায়। চলতি বছর ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন শুরু হবে আরএসএসের শতবর্ষ উদযাপন।
