সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে গুলি চলার ঘটনায় ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। গোটা ঘটনায় কেন্দ্র সরকার নিয়ন্ত্রিত দিল্লি পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধী নেতারা। বিজেপি নেতৃত্বের ক্রমাগত উসকানির জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। যদিও দোষীকে রেয়াত করা হবে না বলেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিকে জামিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীদের রাজঘাটে যাওয়ার আগেই আটকে দেওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে কার্যত ধস্তাধস্তি বেঁধে যায় তাঁদের। পরে বিক্ষোভকারীদের আটক করে দিল্লি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে CAA, NRC বিরোধী মিছিলের আয়োজন করেছিল। মিছিলটি জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজঘাট পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। মিছিলের আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এক যুবককে হাতে রিভলবার নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। পরে মিছিল লক্ষ্য করে গুলি চালায় সে। গুলির আঘাতে জখম হয় এক পড়ুয়া। এই ঘটনায় পড়ুয়াদের ক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছে।
[আরও পড়ুন: ফেসবুকে বদলার হুমকি, ‘জঙ্গি ধাঁচে’ জামিয়ায় গুলি উগ্র হিন্দুত্ববাদীর]
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অভিযোগ, মিছিলের জন্য সকাল থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোটা এলাকা। পুলিশের ব্যারিকেড থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে দাঁড়িয়ে গুলি চালায় হামলাকারী। গুলি চালানোর আগে রীতিমতো বারবার হুমকি দিয়েছে। অথচ সেসময় পুলিশ কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক নেতারাও। কংগ্রেসের তরফে করা টুইটে দিল্লি পুলিশকে কার্যত তুলোধনা করা হয়েছে। দলের টুইটার হ্যান্ডেলে কংগ্রেসের তরফে লেখা হয়, “অমিত শাহ কী ধরণের পুলিশ বাহিনী চালাচ্ছেন? শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হল, আর পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখল।” দিল্লি পুলিশের সাফাই চোখের নিমেষে হামলা হয়েছে, তাই পুলিশের কিছুই করার ছিল না।
[আরও পড়ুন: ‘ইয়ে লো আজাদি’, জামিয়ার পড়ুয়াদের মিছিলে বন্দুক হাতে হানা দুষ্কৃতীর]
এদিকে কেন্দ্র সরকারকে তুলোধনা করেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। টুইটার হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন,”প্রধানমন্ত্রীকেই জবাব দিতে হবে, যে তিনি কেমন দিল্লি বানাতে চাইছেন? তাঁরা কি হিংসা, অরাজকতার পক্ষে থাকবেন নাকি অহিংসার পক্ষে? তাঁরা কি উন্নয়নের পক্ষে থাকবেন নাকি এই সমস্ত ঝামেলা-ঝঞ্ঝাটের পক্ষে?” দিন কয়েক আগে দিল্লিতে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে CAA বিরোধীদের গুলি করে মারার হুমকি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। এই হুমকির জেরেই জামিয়ায় হামলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আসাউদ্দিন ওয়েইসিও। তাঁর কথায়, “অনুরাগ ঠাকুর-সহ কয়েকজন বিজেপি নেতা দেশজুড়ে ঘৃণার আবহ তৈরি হয়েছে। আর তাই পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদি এক পড়ুয়াকে গুলি করছে। আর পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।” একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে ওয়েইসি বলেন, “এবার পোশাক দেখে হামলাকারীকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন তো!” দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আবেদন, “দিল্লির আইনশৃঙ্খলার দিকে নজর দিন।”
The post ‘নীরব দর্শক’, জামিয়ায় গুলিকাণ্ডে দিল্লি পুলিশকে তুলোধনা বিরোধীদের appeared first on Sangbad Pratidin.