সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরল, বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেন অনেকেই। কিন্তু প্রকৃত সহমর্মিতা নিয়ে বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে কাজ করেন কজন? সেই সংখ্যা তো হাতে গোনা। এমনকী বিরল প্রাণীদের নিধনেও কেউ কেউ পিছপা হন না। কিন্তু সত্যি তাদের জন্য ভেবে সেবা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থার মতো বড় উদ্যোগ নেওয়া হল গুজরাটের ভান্তারায়। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি সংরক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন। যা বিরল প্রজাতির উদ্ধার হওয়া প্রায় দেড় লক্ষ প্রাণীর ঘর হয়ে উঠেছে। এশিয়ার বিরল সিংহ, তুষারচিতা, একশৃঙ্গ গণ্ডার-সহ একাধিক বিরলতম প্রাণীর বাসস্থানের পাশাপাশি তাদের সম্পূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থাও রয়েছে জামনগরের এই চিড়িয়াখানায়।
শুনতে সহজ, কাজে কঠিন। দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা কোনও চারপেয়ে অথবা সদ্য মা-হারা দুধের শাবক, তাদের তো শুশ্রূষা প্রয়োজন। কে-ই বা ভাববে তাদের কথা? দু-একজন বন্যপ্রাণপ্রেমী নিজেদের সীমিত স্বার্থ নিয়ে চেষ্টা করেন আপ্রাণ। বিপুলা এ প্রাণীজগতের তাতে কতটুকুই বা হবে? তাই তাদেরই কথা ভেবেছে ভান্তারার সংরক্ষণ কেন্দ্র। ২০০০ বিরল প্রজাতির প্রাণী আর বিপর্যয় থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় দেড় লক্ষ চারপেয়ের সেবাকেন্দ্র, পুনর্বাসন কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। কী নেই এখানে? বিশাল এলাকায় প্রাণীদের মনের মতো বাসস্থান তো বটেই, উচ্চমানের যন্ত্রপাতি-সহ আধুনিক হাসপাতালও রয়েছে এই চত্বরে। যেখানে অসুস্থ প্রাণীদের এমআরআই, সিটি স্ক্যান, আইসিইউ রয়েছে। অ্যানাস্থেশিয়া, কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, এন্ডোস্কোপির মতো কঠিন চিকিৎসা পদ্ধতিতে সহজেই কাজ হয় এখানে।
ভান্তারার পশু হাসপাতালে নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এক্স হ্যান্ডেল।
আর এমন সুন্দর জায়গায় এসে আপ্লুত নরেন্দ্র মোদি। কখনও তিনি সিংহশাবককে ধরে দুধ খাওয়ালেন, কখনও বা খেললেন বিরল খুদে বাঁদরের সঙ্গে! কখনও আবার কাচের ঘেরাটোপের বাইরে থেকে হাত মেলালেন বাঘের সঙ্গে। যে সাদা সিংহছানাকে দুধ খাওয়ালেন মোদি, সে নাকি এখানেই জন্মেছে। তার মাকে উদ্ধার করে এখানেই আনা হয়েছিল চিকিৎসার জন্য। তারপর এই শাবকের জন্ম।
ভান্তারায় উদ্ধার হওয়ায় প্রাণীশাবককে দুধ খাওয়াচ্ছেন মোদি। ছবি: এক্স হ্যান্ডেল।
শুধু কি এরা? বিরল ওকাপি, ক্যারাকল, জেব্রা, জিরাফের অবাধ বিচরণক্ষেত্র এই ভান্তারার বৃহৎ অরণ্য। তাদের সকলের সঙ্গে মোদি বেশ খানিকটা সময় কাটান। এছাড়া সেখানে অনন্ত আম্বানির প্রিয় একটি হস্তী রয়েছে, যার সঙ্গে রীতিমতো খেললেন প্রধানমন্ত্রী। ভান্তারায় তাঁর হাত ধরে যে বিশাল একটা আস্তানা পেল পৃথিবীর সমস্ত বিরল প্রাণীরা, তা বলাই যায়।