সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজরাট ভোটের আগে নতুন করে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ‘জলঘোলা’ শুরু করেছে কেন্দ্র। ২০১৯ সালে সংসদে এই বিল পাশ হলেও মোদি (Narendra Modi) সরকার এখনও এটি কার্যকর করে উঠতে পারেনি। এর নেপথ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে যে বিক্ষোভ হয়েছিল, তার প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু গুজরাট (Gujarat) ভোটের আগে কেন্দ্রের একটি বিজ্ঞপ্তি ঘিরে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক।
আসলে গুজরাট ভোটের মুখে অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে বড়সড় চমক দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক (Home Ministry of India) বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গুজরাটের দুই জেলা মেহসানা ও আনন্দে বসবাসকারী অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ভিত্তিতেই ওই দুই জেলায় অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ১৯৫৫ সালের আইনে ধর্মের কোনও উল্লেখই ছিল না। কিন্তু কেন্দ্র যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তাতে স্পষ্টত শুধু অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিরোধীরা যখন গলা ফাটাচ্ছেন, তখনই CAA কার্যকর করা নিয়ে বড়সড় ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
[আরও পড়ুন: ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায় বিপত্তি, রাহুলের পাশে হাঁটতে হাঁটতে মৃত্যু কংগ্রেস নেতার]
সোমবার গুরু নানকের জন্মজয়ন্তীর প্রাক্কালে এক অনুষ্ঠানে মোদি বলেন,”বিভাজনের সময় পাঞ্জাবের মানুষের আত্মত্যাগের কথা ভেবেই সরকার বিভাজন বিভীষিকা স্মরণ দিবস পালন করা শুরু করেছে। আমরা একই সঙ্গে বিভাজনের ফলে যেসব হিন্দু এবং শিখ পরিবারকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন, গুজরাটে কীভাবে বিদেশে নিপীড়নের শিকার হওয়া শিখ পরিবারগুলিকে আমরা নাগরিকত্ব দিচ্ছি। এই সিদ্ধান্ত বিশ্বের সব প্রান্তের শিখেদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করবে যে, ভারত তাদেরই দেশ।”
[আরও পড়ুন: ২০১৯ সাল থেকে অনুব্রত ও সুকন্যার অ্যাকাউন্টে লটারির মোটা টাকা! চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল CBI]
বস্তুত, মোদি একা নন। তাঁর মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য অর্জুন রাম মেঘওয়ালও (Arjun Ram Meghwal) সোমবার রাজ্যে এসে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দ্রুত কার্যকর করার ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছেন। বনগাঁয় ঠাকুরবাড়ির রাস উৎসবে এসে মেঘওয়াল বলেন, “ভারত সরকার আইন করেছে৷ কিছু সময় লাগছে টেকনিক্যাল কারণে৷ কিন্তু নাগরিকত্ব দেওয়া হবেই৷” মেঘওয়ালকে পাশে নিয়ে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরও (Shantanu Thakur) বলেন “পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতবর্ষে সিএএ প্রয়োগ হবেই৷ কেবল সময়ের অপেক্ষা৷ সংবিধানকে কেউ উপেক্ষা করতে পারে না৷” বস্তুত বিজেপি নেতারা যেভাবে লাগাতার ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট, আগামী লোকসভা নির্বাচনে ফের বড়সড় ইস্যু হতে চলেছে এই নাগরিকত্ব আইন।