সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিজের 'বন্ধু' বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই 'বন্ধুর' শুল্কবাণে কার্যত ধসে গিয়েছে ভারতের শেয়ার বাজার। এহেন পরিস্থিতিতে মোদি-ট্রাম্পের সেই 'বন্ধুত্ব'কে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি জানালেন, ভ্রমের বেলুন ফুটো করে দিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর পরামর্শ, কারও অনুগ্রহে না থেকে ভারতকে উৎপাদন নির্ভর, স্থিতিশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
সোমবার এক্স হ্যান্ডেলে রাহুল গান্ধী লেখেন, 'এতদিন ধরে যে ভ্রমের বেলুন ফোলানো হয়েছিল, ট্রাম্প সেই বেলুন ফুটো করে দিয়েছেন। বাস্তবটা সকলের সামনে চলে এসেছে। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।' পাশাপাশি তিনি আরও লেখেন, 'এই চরম বাস্তবটা এবার স্বীকার করে নেওয়া উচিত দেশের। উৎপাদন নির্ভর, স্থিতিশীল অর্থনীতির দেশ গড়ে তোলা ছাড়া আমাদের কাছে অন্য কোনও বিকল্প নেই। এই অর্থনীতি সকল ভারতীয়কে সুবিধা প্রদান করবে।'
গত ৫ এপ্রিল ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্কনীতির জেরে বিরাট ধাক্কা খেয়েছে দেশের শেয়ার বাজার। সোমবার বাজার খুলতেই দেখা যায়, প্রায় চার হাজার পয়েন্ট পড়েছে সেনসেক্স। ৩৯৩৯.৬৮ পয়েন্ট পড়ে ৭১ হাজারের ঘরে নেমে যায় সেনসেক্সের সূচক। প্রায় ৩.৯ শতাংশ পতন হয়েছে সেনসেক্সে। হাজার পয়েন্টের বেশি পড়ে যায় নিফটিও। সবমিলিয়ে ভারতের বাজারে বিনিয়োগকারীদের ১৯ লক্ষ কোটি টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে একদিনের মধ্যেই। ৪ থেকে ৭ শতাংশ পড়ে গিয়েছে গাড়ি-আইটি সংস্থাগুলির শেয়ার। ৭ শতাংশ পড়েছে আদানি গোষ্ঠীর একাধিক সংস্থার শেয়ার। ছোট এবং মাঝারি সংস্থার শেয়ার যথাক্রমে ৬.২ এবং ৪.৬ শতাংশ পড়েছে। গুরুতর এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি ট্রাম্পের নীতিকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে দারুন হৃদ্যতা রয়েছে বলে প্রচার করা হয় বিজেপির তরফে। সাক্ষাতে আলিঙ্গনও করতে দেখা যায় দুই রাষ্ট্রপ্রধানকে। খোদ বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর জানিয়েছিলেন এই বন্ধুত্বের মূল ভিত্তি হল দুজনই জাতীয়তাবাদী নেতা। তবে বন্ধু হয়ে বন্ধুকে বিপদে ফেলার ঘটনা ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে একেবারেই স্বাভাবিক নয়। সেখানে ভারতের উপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই শুল্কের কোপ প্রশ্ন তুলছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বন্ধুত্ব নিয়ে। যদিও রাহুলের ইঙ্গিত, এতদিন ধরে ভ্রমের বেলুন ফোলানো হয়েছিল, সেটাই ফুটো করে দিলেন ট্রাম্প নিজে।