সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জো ম্যায় বোলতা হু, ও ম্যায় করতা হুঁ, জো ম্যায় নেহি বোলতা হুঁ ও ম্যায় ডেফিনেটলি করতা হুঁ...। বলিউডি সিনেমার জনপ্রিয় সংলাপ। বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক এবং 'অপারেশন সিঁদুরে'র পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য অনেকেই এই সংলাপটি ব্যবহার করছেন। কারণ, হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেও জনসমক্ষে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী কিন্তু ঘুণাক্ষরেও পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতের বিষয়টি নিয়ে 'হিন্ট' দেননি। এমনকী, বডি ল্যাঙ্গুয়েজও বুঝতে দেননি, কোনও বিষয় নিয়ে তিনি চিন্তায় আছেন বা টেনশন করছেন। তাঁর এই হাবভাবেই পাকিস্তান 'ধোঁকা' খেয়েছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মহল।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন ভ্যালিতে নির্মম হত্যালীলা চালায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। বেছে বেছে ২৫ নিরীহ পর্যটক হত্যা করেছিল পাক জঙ্গিরা। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে এক স্থানীয় কাশ্মীরির প্রাণও যায়।তারপর থেকেই বদলার জ্বালায় জ্বলছিল আসমুদ্র হিমাচল। এদিকে সেনাবাহিনীর তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। দফায় দফায় বৈঠক করচিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। আলোচনায় থাকছিলেন সিডিএস, সেনাপ্রধানরা। কূটনৈতিক চাল চেলে পাকিস্তানকে ধরাশায়ী করা গেলেও প্রকৃত প্রত্যাঘাত অধরাই ছিল। এর মাঝেই আচমকা বুধবার দেশজুড়ে ২৭ জেলায় এবং ৮ কেন্দ্রশাসিত এলাকায় বিভিন্ন এলাকায় মক ড্রিল করা হবে বলে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। কেন এই ঘোষণা তা নিয়ে হকচকিয়ে যায় দেশবাসী। তথৈবচ অবস্থা ছিল পাকিস্তানেরও। এর মাঝেই রাতের অন্ধকারে প্রত্যাঘাত করে ভারত। বদলা নেয় টার্গেট কিলিংয়ের।
হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই জনসমক্ষে ছিলেন মোদি। এক সংবাদ মাধ্যমের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে সিন্ধু নদের জল নিয়ে কথা বললেন 'পি' ওয়ার্ড উচ্চারণ করেননি। অর্থাৎ পাকিস্তানের নাম নেননি। মনোবিদরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর হাবেভাবেও বোঝা যায়নি বড় কিছু ঘটতে চলেছে। এত বড় অপারেশনের আগে সাধারণ দেশের প্রধানমন্ত্রী চিন্তায় থাকবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই রাস্তার ধারপাশ দিয়েও যাননি মোদি।
পুলওয়ামার বদলা নিতে একইভাবে ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারত। এতো বড় হামলার আগে কাকপক্ষীও টের পায়নি! ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেখে তো আন্দাজই করতে পারেনি পাকিস্তানও। সেবার এয়ারস্ট্রাইকের আগের দিন, ২৫ ফেব্রুয়ারি নয়া দিল্লিতে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় কেউ আন্দাজ করতে পারেনি রাতে কী হতে চলেছে! সেবারও একইভাবে নির্লিপ্ত ছিলেন তিনি।
