সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকিকে খুন করতে শুটারকে ৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম দিয়েছিল গ্যাংস্টার আনমোল বিষ্ণোই। পাশাপাশি গাড়ি ও বাড়ি দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল শুটারের সঙ্গে। গত বছর মুম্বইয়ে সাড়া ফেলে দেওয়া এই হত্যাকাণ্ডে সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। সেখানেই এই বিস্ফোরক দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।
এই মামলার তদন্তে নেমে এক ফোন কলের রেকর্ডিং হাতে পান তদন্তকারীরা। যেখানে সিদ্দিকি হত্যাকান্ডে ফেরার অভিযুক্ত শুভম লঙ্করের সঙ্গে কথোপকথন প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। যেখানে লাউডস্পিকারে দিয়ে বিষ্ণোইয়ের বার্তা শোনানো হয়েছিল তিন শুটারকেও। ফোনে আনমোল বিষ্ণোই হত্যাকারীদের জানান, "লরেন্স ভাইয়ের তরফে আপনাদের একটি কাজ দেওয়া হয়েছে। আপনারা সাহস হারাবেন না। বান্দ্রা এলাকায় এলকটি ঘরে রেইকি করতে হবে আপনাদের। ওই এলাকাতেই একটা ঘর ভাড়া নিন। কাজ সারার পর একটি চার চাকার গাড়ি ও একটি করে ফ্ল্যাট প্রত্যেককে দেওয়া হবে। তার আগে আপনাদের অগ্রিম ৫ লক্ষ টাকা করে দেব। ভাইয়ের হয়ে বদলা নিতে হবে। আমরা আমাদের ধর্মের জন্য বদলা নেব।"
তদন্তে পুলিশের দাবি, এনসিপি দলের প্রাক্তন বিধায়ক বাবা সিদ্দিকিকে হত্যার পিছনে মূল কারণ ছিল তাঁর দাউদ যোগ। লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং মনে করত মুম্বইয়ের গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ ছিল সিদ্দিকির। শুধু তাই নয়, এই গ্যাংয়ের দাবি অনুযায়ী, ১৯৯৩ সালে মুম্বই হামলার পিছনে সক্রিয় যোগ ছিল সিদ্দিকির। এই হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত শুটার শিবকুমার গৌতমকে জেরা করে এমনই তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। চার্জশিটে এই বিষয়েও বিশদ তথ্য দেওয়া হয়েছে তদন্তকারীদের তরফে।
১২ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিধায়ক বাবা সিদ্দিকিকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দেয় আততায়ীরা। পুলিশের দাবি, শুধু সিদ্দিকি নন, হত্যাকারীদের টার্গেটে ছিলেন সিদ্দিকির পুত্র বিধায়ক জিশান সিদ্দিকিও। রীতিমতো কপালজোরে রক্ষা পান তিনি। এই খুনের দায় স্বীকার করে কুখ্যাত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। দাবি করা হয়, সলমন খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও দাউদ গ্যাংয়ের সঙ্গে যোগ থাকার জেরেই বাবা সিদ্দিকিকে হত্যা করেছে তারা। হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত মূল হত্যাকারী শিবকুমার-সহ সব সুপারি কিলারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি অস্ত্র সরবরাহকারী থেকে শুরু করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত একাধিক জন বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে। ভারতের অনুরোধ মেনে আমেরিকায় গা ঢাকা দিয়ে থাকা আনমোল বিষ্ণোইকেও গ্রেপ্তার করেছে সেখানকার পুলিশ। চলছে প্রত্যার্পণের প্রক্রিয়া। এরইমাঝে এই হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট পেশ করা হল পুলিশের তরফে।
