সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্ভল বিতর্কের মাঝেই এবার উত্তরপ্রদেশের একের পর এক মসজিদে কড়া পদক্ষেপ পুলিশের। শব্দদূষণের অভিযোগে শনিবার ফিরোজাবাদের একাধিক মসজিদ থেকে লাউডস্পিকার খুলে নিল পুলিশ। এই ঘটনায় বিতর্ক চরম আকার নিতেই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, জোরে স্পিকার বাজানোর জেরে মসজিদ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল পুলিশের কাছে, যার জেরেই এই পদক্ষেপ।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অনেকদিন ধরেই পুলিশের কাছে অভিযোগ আসছিল বহু মসজিদে তারস্বরে লাউডস্পিকার বাজানো হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে এর আগে একাধিক মসজিদের লাউডস্পিকারের শব্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও মসজিদ কর্তৃপক্ষ আমল না দেওয়ায় শনিবার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ফিরোজাবাদের পুলিশ সুপার রবিশংকর প্রসাদ বলেন, 'আমরা সব ধর্মকে সম্মান করি, কিন্তু নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক। প্রকাশ্যে এমন উচ্চস্বরে মাইক বাজানো অন্যের সমস্যার কারণ। তাই আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছি।'
ওই পুলিশকর্তা আরও জানান, শনিবার জেলার একাধিক মসজিদে অভিযান চালানো হয়। যেখানে তারস্বরে মাইক বাজানো হচ্ছিল। সেখানকার মাইকগুলি খুলে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কিছু মসজিদের মাইকের শব্দ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সমস্ত ধর্মীয়স্থান ও প্রতিষ্ঠানকে শব্দদূষণ সংক্রান্ত বিধি মেনে চলার জন্য। যদি তা লঙ্ঘন করা হয় সেক্ষেত্রে আইনানুগ কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পুলিশের তরফে এই ঘটনাকে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ বলে দাবি করা হলেও, বিরোধী শিবিরের অভিযোগ যোগী আদিত্যনাথের কট্টর হিন্দুত্ব নীতির জেরেই বেছে বেছে মসজিদগুলিকে নিশানা করা হচ্ছে। সম্প্রতি সম্ভলের ঘটনায় পর এই ঘটনা আরও বেড়েছে। উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসে সম্ভলের শাহী জামা মসজিদ নিয়ে একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই মসজিদে সমীক্ষার নির্দেশ দেয় উত্তরপ্রদেশের নিম্ন আদালত। মামলাকারীর দাবি ছিল, অতীতে ওই এলাকায় ছিল হরিহর মন্দির। মুঘল আমলে তা ভেঙে মসজিদ তৈরি হয়। ১৫২৯ সালে এই কাজ করেন মুঘল বাদশা বাবর। আদালতের নির্দেশ মতো সমীক্ষার কাজ চলাকালীন মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একাধিক জনের মৃত্যু হয়। এর পর থেকে উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলায় মসজিদে মাইক বাজানোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে পুলিশ।