বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে সামাজিক মাধ্যমে আবেগঘন দেওয়াল লিখন ছেলের। সেই দেওয়াল লিখন মন ছুঁয়ে গেল আপামর কংগ্রেস (Congress) নেতাকর্মীর। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর (Rajiv Gandhi) উদ্দেশে রাহুলের (Rahul Gandhi) বার্তা, “বাবা তুমি আমার সঙ্গেই আছ। প্রেরণা হয়ে, স্মৃতিতে, সব সময়।”
রবিবার ছিল ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। আর সেই দিনেই রাহুলের পোস্টে ঝরে পড়ল প্রয়াত বাবার প্রতি অদম্য ভালবাসা ও শ্রদ্ধা। সেই সঙ্গে রাজীব গান্ধীকে নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও-ও শেয়ার করেছেন তিনি। আবার ওই দিনই রাজীবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এসে ‘মিশন মধ্যপ্রদেশ’ স্থির করল কংগ্রেস। কর্নাটকের সাফল্যকে হাতিয়ার করে এবার মধ্যপ্রদেশ দখলের লক্ষ্যে কোমর বেঁধে নামছে শতাব্দীপ্রাচীন দল। সেনাপতি সোনিয়া-তনয়া প্রিয়াঙ্কা (Priyanka Gandhi)। চলতি বছরের শেষেই মধ্যপ্রদেশ-সহ চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। এর মধ্যে মধ্যপ্রদেশে বিশেষ নজর রয়েছে হাত শিবিরের। সূত্রের খবর, আগামী মাসের শুরুতেই মধ্যপ্রদেশ দখলের লক্ষ্যে নামছে কংগ্রেস। ১২ জুন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর একগুচ্ছ কর্মসূচি দিয়ে শুরু হচ্ছে কংগ্রেস মিশন মধ্যপ্রদেশ। ওইদিন জব্বলপুরে নর্মদায় স্নান করে প্রচারে নামবেন প্রিয়াঙ্কা।
[আরও পড়ুন: CBI তলব নিয়ে অভিষেকের মামলায় দ্রুত শুনানি নয়, নিয়ম মেনে আবেদনের পরামর্শ সুপ্রিম কোর্টের]
এদিন সকালে বীরভূমিতে রাজীব গান্ধীর সমাধিস্থলে গিয়ে তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধাও জানান রাহুল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বোন প্রিয়াঙ্কাও। রাজীবকে শ্রদ্ধা জানান সোনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তবে লক্ষ্য বাকি চার রাজে্যর ভোট। প্রিয়াঙ্কাকে দিয়ে প্রচার শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে এআইসিসি। হিমাচল ও কর্নাটকে তাঁকে সামনে রেখে প্রচারে ঝড় তোলায় সাফল্য এসেছে। সেই সঙ্গে জল্পনা শুরু হয়েছে, খাড়গে বা রাহুল গান্ধী নন কেন। প্রিয়াঙ্কা কেন প্রচারের শুরুতেই? তা হলে কি প্রিয়াঙ্কাকে মুখ করেই এগোতে চাইছে হাত শিবির।
গত ভোটে বৃহত্তম দল হিসাবে কংগ্রেস সরকার গঠন করলেও করোনাকালে মধ্যপ্রদেশে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতার দখল নেয় গেরুয়া শিবির। ২০ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। এবার ভাল ফল করার ব্যাপারে আশাবাদী কংগ্রেস। কমলনাথ, দিগ্বিজয় সিংয়ের মতো স্থানীয় নেতারাও বেশ শক্তিশালী। অন্যদিকে, বিজেপিতে শিবরাজ চৌহান, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার গোষ্ঠীকোন্দলও সুবিদিত। আর কোভিডের সময় রাতারাতি সরকার দখল নেওয়ায় মধ্যপ্রদেশবাসীর মনে ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভকে কাজে লাগাতে একাধিক জনমোহিনী প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে হাত শিবির।
[আরও পড়ুন: উপবাসে চাহিদা নিরামিষ খাবারের, কেন্দ্রের নির্দেশে ট্রেনের মেনুতে বন্ধ হচ্ছে পিঁয়াজ-রসুন]
ইতিমধ্যেই দলের তরফে জানানো হয়েছে, ক্ষমতায় ফিরলে বিনামূল্যে ১০০ ইউনিট বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। পরের ১০০ ইউনিটের জন্য মাত্র ১০০ টাকা দিতে হবে মধ্যপ্রদেশবাসীকে। এছাড়াও ৫০০টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের জন্য প্রত্যেক মাসে দেড় হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেছে কংগ্রেস।
দলের গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করলে সাফল্য যে আসবেই কর্নাটক তার প্রমাণ। সিদ্দারামাইয়া ও শিবকুমার তা করে দেখিয়েছেন। তাঁদের উদাহরণকে সামনে রেখে আগামী বুধবার দিল্লিতে ভোটমুখী চার রাজ্যের নেতাদের বৈঠকে ডেকেছেন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। চার রাজ্যের সব শিবিরের নেতাদের দিল্লিতে বৈঠকে আসতে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনের রণকৌশল ছাড়াও প্রচার কৌশল নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।