সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনে বাদ পড়ছে ৬৫ লক্ষ ভোটার। 'ভোটচুরি'র অভিযোগে নীতীশ কুমারের রাজ্যের সাসারাম থেকে রবিবার দীর্ঘ ১৩০০ কিলোমিটার 'ভোটার অধিকার যাত্রা' শুরু করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বিরোধী শিবির ইন্ডিয়া জোটের এই কর্মসূচির প্রথম দিন অংশ নিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব। ছিলেন লালুপুত্র তেজস্বী যাদবও। পদযাত্রা শুরুর আগে রাহুল হুঙ্কার দেন, ‘বিহারে ভোট চুরি করতে দেব না’।তাৎপর্যপূর্ণভাবে একই দিনে নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেখানে রাহুল গান্ধীর 'ভোটচুরি' মন্তব্য নিয়ে তীব্র আপত্তি করলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার।
এদিন পদযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় রাহুল গান্ধী সরাসরি অভিযোগ করেন, "আসল ভোটারদের নাম কেটে নতুন ভোটারদের জুড়ে এসআইআর করে নির্বাচন জেতার চেষ্টা করছে ওরা। কিন্তু বিহারের মানুষ তাদের ভোট চুরি করতে দেবে না। " এখানেই না থেমে সরসারি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ আনেন কংগ্রেস নেতা। তিনি বলেন, "আমরা আগে জানতাম না যে নির্বাচন কমিশন কীভাবে ভোট চুরি করে। তবে এখন সবাই সব জেনে গিয়েছেন। আমরা তাদের চুরি ধরব।’’ লোকসভার বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, আরএসএস এবং বিজেপি সমগ্র ভারতে সংবিধান মুছে ফেলার কৌশল নিয়েছে।
১৬ দিন ব্যাপী 'ভোটার অধিকার যাত্রা' শেষ হবে ১ সেপ্টেম্বর পাটনায়। ১৩০০ কিলোমিটার পথে বিহারের মানুষের কাছে এসআইআর নিয়ে বার্তা দেওয়াই উদ্দেশ্য এই কর্মসূচির। কার্যত এই পদযাত্রায় এক ঢিলে দুই পাখি মারার কৌশল নিয়েছে বিরোধী শিবির। একদিকে যেমন নির্বাচন কমিশনের নিবিড় সংশোধন নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হবে, আবার এই কর্মসূচির সূত্রেই বিহারের মানুষের কাছে পৌঁছনোর সুযোগ থাকছে। ১৬ দিনের এই সফরে গয়া, মুঙ্গের, ভাগলপুর, কাটিহার, পূর্ণিয়া, মধুবনী, দ্বারভাঙা, পশ্চিম চম্পারণ-সহ ২০টির বেশি জেলা ঘুরবেন রাহুল। সঙ্গে থাকবেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবও। কর্মসূচি চলাকালীন ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন কংগ্রেস সাংসদ। রাহুল জানিয়েছেন, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিই নয়, এটি গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার আন্দোলন।
প্রসঙ্গত, এদিন ‘ভোটচুরি’র মতো আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে নাম না করে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে তুলোধোনা করেছে নির্বাচন কমিশন। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার রাহুলকে নিশানা করে বলেন, “কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে জনগণকে নিশানা করে রাজনীতি চলছে। সাধারণ ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এভাবে মিথ্যাকে সত্যি করা যাবে না। কারও মিথ্যা অভিযোগে নির্বাচন কমিশন ভয় পায় না।”
